প্রতিনিধি, রাবি: আওয়ামী সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ সাবেক সমন্বয়ককে কৌশলে আটকে রেখে ‘মব’ তৈরির চেষ্টার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সাবেক সমন্বয়কেরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাবেক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী মিশু বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশের ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে বারিন্দ মেডিকেল কলেজ থেকে আমাদের কাছে বেশকিছু অভিযোগ আসতে থাকে। সেখানে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবার (যিনি শাহরিয়ার আলমের অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন) আশ্রয়ে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কর্মরত রয়েছেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতে আমরা সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সচিব তাজুল ইসলাম রনির সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনায় বসি। আলোচনার একপর্যায়ে সেখানে কর্মরত বেশ কয়েকজন অফিস স্টাফ (যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত) এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ঢুকে পড়েন এবং আমাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। এর মধ্যে রুম এবং প্রতিষ্ঠানটির বাইরে মব তৈরি করে আমাদের আটকে ফেলা হয় এবং ইচ্ছেকৃতভাবে চাঁদাবাজ বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়।’
মিশু বলেন, ‘এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জি কে এম মেশকাত চৌধুরী মিশু, সংগঠনের জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠক সোহাগ সরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল বারী ও ছাত্রনেতা আল-সাকিব।
এদিকে জানা যায়, আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে চার সমন্বয়ক বারিন্দ মেডিকেল কলেজে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবা মো. শামসুদ্দিনের কক্ষে কথা বলছিলেন। এ সময় বাইরে থেকে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দিয়ে লোকজন জড়ো করেন। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল তৈরি হয়। পরে তারা সেখানে সমন্বয়কদের আটকে রাখে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যরা খবর পেয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করেন।