সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) অর্থায়নে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সেচ ভবন প্রাঙ্গণে কৃষক উৎপাদিত নিরাপদ সবজি সরাসরি বিক্রির জন্য স্থাপিত ‘কৃষকের বাজার’ রাজধানীর নিকটবর্তী কোনো এলাকায় স্থায়ীভাবে নির্মাণ করার কথা শোনা গেছে কয়েক বছর আগে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহায়তায় বর্তমানে এ বাজারে মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদীসহ কয়েকটি জেলার কৃষকরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করেন। এজন্য তাদের দিতে হয় না কোনো দোকান ভাড়া কিংবা পরিবহন খরচ।
বাজারটিতে নানা জাতের শাকসবজি বিক্রি করছেন কৃষকরা। তবে দাম অন্য বাজারের মতোই। ক্রেতারা বাজারটির পণ্য নিয়ে তারা বলছেন, দাম অন্য বাজারের মতোই, তবে যেহেতু কৃষকরা সরাসরি বাজারে সবজি আনছেন, তাই এগুলো বিষমুক্ত ও নিরাপদ।
‘কৃষকের বাজার’ স্থানান্তর করে রাজধানীর ঢাকার অদূরে স্থায়ীভাবে নির্মাণে সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন করবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

এফএও এ কাজে সব অর্থায়ন করবে। নিরাপদ শাকসবজি ও ফলমূল সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি নিরাপদ কাঁচাবাজার স্থাপনের ক্ষেত্রে ঢাকার সাভার, নরসিংদীর বেলাবো ও মানিকগঞ্জের সিংগাইর বেছে নেয়া হবে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে প্রাথমিকভাবে ৪৫০ জন কৃষককে বাজারভিত্তিক কৃষিপণ্য উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং বাজার পণ্যের নিরাপদ ও পুষ্টিগুণ নিশ্চিতে ৬০ জন দোকান মালিককে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা। সেচ ভবন থেকে কৃষকের বাজার স্থানান্তর করা হলে কৃষকরা যেখানে নিরাপদ কৃষিপণ্য বিক্রি করবেন।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্থায়ী ‘কৃষকের বাজার’ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম কোন পর্যায়ে আছে আমাদের জানা সেই। এ অবস্থায় রোববার শেয়ার বিজে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন নাগরিকদের ভোগান্তি কমাবে বলেই ধারণা। ঢাকা জেলা প্রশাসন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং জনসাধারণকে স্বস্তি প্রদানের লক্ষ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করতে ‘জনতার বাজার’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। এখানে ক্রেতারা সাশ্রয়ী দামে নিত্যপণ্য কিনতে পারবেন আগামী মাসে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে প্রথম বাজারটি চালু হবে এবং পরে মহানগরীর আরও পাঁচটি স্থানে এ উদ্যোগ সম্প্রসারিত করা হবে।

এছাড়া রমজান মাসে ডিম-মুরগির বাজারে স্বস্তি রাখতে রাজধানীর ১০০ স্থানে সাশ্রয়ী দামে ডিম মুরগি ও কৃষিজাত পণ্য বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন করবে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। দুটি উদ্যোগই প্রশংসনীয়। এতে সীমিত ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠী নয়, মধ্যবিত্তরাও উপকৃত হবেন। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মধ্যবিত্তরাও বিপাকে আছেন। এমনও দেখা গেছে টিসিবির পণ্য কেনার লাইনে দাঁড়িয়েছেন সমাজে বিত্তশালী বলে পরিচিতরা। কৃষকের বাজারে হয়তো বিত্তশালীরাও আসবেন সাশ্রয়ের জন্য নয়, নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত সবজি কিনতে। কৃষকের বাজার স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠার করা গেলে আপার জনসাধারণ উপকৃত হবে। সরকারের উচিত এমন উদ্যোগে প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা দেয়া।