সা ত কা হ ন: সওগাত নাজবিন

????????????????????????????????????

বেনজির আবরার: জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যুবদূত সওগাত নাজবিন খান। গড়ে তুলেছেন এইচএ ডিজিটাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পেয়েছে স্কুলটি বৈশ্বিক স্বীকৃতি। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জিতেছেন কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক। ঠাঁই পেয়েছেন ফোর্বস ম্যাগাজিনের ত্রিশ সামাজিক উদ্যোক্তার তালিকায়।

সওগাত নাজবিন খান স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করার। এর মধ্য দিয়ে অন্য দেশের কাছে বাংলাদেশকে একটি অনুকরণীয় মডেল হিসেবে দাঁড় করাতে চান। ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ অগ্রগামীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। আরও স্বপ্ন দেখেনÑএদেশে নারী ও তরুণদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশ গঠনে তারা অংশগ্রহণের যথাযথ সুযোগ পাবে।

পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছেন সব সময়। সফলতার গল্পটা নিজের মুখেই বললেন সওগাত নাজবিন। ‘ছাত্রজীবনে এইচএ ফাউন্ডেশন নামে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি। এ ফাউন্ডেশনের মূল কার্যক্রম ছিল ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার স্কুল পর্যায়ের মেধাবীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান।’ এজন্য প্রতিবছর বাছাইমূলক পরীক্ষার আয়োজন করা হতো। বৃত্তি প্রদান উপলক্ষে একই দিনে অনুষ্ঠিত হতো খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। এ কার্যক্রমের ফলে উপজেলাটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘এ সাফল্য ধরে রাখার জন্য গ্রামের মানুষের কাছে আধুনিক শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করি। গতানুগতিক পাঠদান ও শেখার পরিবর্তে পড়ালেখাকে শিক্ষার্থীদের কাছে উপভোগ্য করে তুলতে ইন্টারঅ্যাক্টিভ ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিই।’ এইচএ ডিজিটাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এ পরিকল্পনারই বাস্তব রূপ।

নানা পুরস্কার অর্জন করেছেন সওগাত নাজবিন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন ডেভেলপমেন্ট ওয়ার্ক অর্জন করি। এশিয়া ইয়াং পারসন অব দি ইয়ার ২০১৬ উপাধি পাই। এছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জিইএসএস এডুকেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৭ দেওয়া হয় আমাকে। জাতিসংঘের উইমেন স্কলারশিপ ফর পিস ২০১৬ অর্জন করেছি।’ ২০১৫ সালে জার্মানির শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নিয়ে সফল গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে গ্রিন ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যুবদূত নির্বাচিত হন। এর বাইরেও কিছু পুরস্কার, স্কলারশিপ, ফেলোশিপ পেয়েছেন। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির সংখ্যা বেশি।

তরুণদের উদ্দেশে সওগাত নাজবিন বলেন, বাংলাদেশের তরুণদের আত্মনির্ভরশীল হওয়া শিখতে হবে। সব কাজ প্রথমে নিজে করার চেষ্টা করতে হবে। ছোট-বড় সবার কাছ থেকে শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। পড়াশোনার পাশাপাশি গঠনমূলক ও সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। বাংলাদেশে অনেক সেবা ও উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে অনেক কিছু শেখা যায়। এ অভিজ্ঞতাগুলো পরবর্তী জীবনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। তবে পড়াশোনা ও সমাজসেবামূলক কাজÑএ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটানো জানতে হবে। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে, যেকোনো পর্যায়ে থেকেই পড়াশোনা ও কাজ করে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখা যায়। এজন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা, ধৈর্য ও দৃঢ় মনোবল। কাজেকর্মে এসবের যথাযথ প্রতিফলন

ঘটানো জরুরি।