সিইসির নয়, গাইবান্ধার ভোট বন্ধের সিদ্ধান্ত ইসির: হাবিবুল আউয়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক: গাইবান্ধার উপনির্বাচনে মাঝপথে ভোটগ্রহণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে এসে ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের বিবরণ তুলে ধরেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা হঠকারী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। এ সিদ্ধান্ত সিইসি গ্রহণ করেনি, কমিশন গ্রহণ করেছে। সিইসি কোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন না; করতেও পারেন না।’

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচন ছিল বুধবার। ১৪৫টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলছিল।

সবগুলো কেন্দ্রের সিসি ক্যামেরা বসিয়ে ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল ভোটের পরিস্থিতি। সেখানে নানা অনিয়মের ঘটনা সরাসরি দেখে দুপুরের মধ্যেই অর্ধশত কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি। বেলা আড়াইটার দিকে পুরো নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান সিইসি আউয়াল।

এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিএনপিবিহীন এই ভোটে অংশগ্রহণকারী জাতীয় পার্টি ইসির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ দিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলে, গোলযোগহীন এই নির্বাচনে ভোট বন্ধ করার কারণ তাদের কাছে বোধগম্য নয়।

এ পরিস্থিতিতে ‘বিভ্রান্তি’ দূর করতে গতকাল  বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আসেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা ও মো. আলমগীর তার সঙ্গে ছিলেন।

গাইবান্ধার উপনির্বাচনে কেমন অনিয়ম হয়েছিলÑইসি কীভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে, কোন পরিস্থিতে, কীভাবে ভোট বন্ধ করা হয়েছেÑতার বিস্তারিত ব্যাখ্যা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন সিইসি।

তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সমার্থক নয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও একজন কমিশনার। একাধিক সদস্য নিয়ে এই কমিশন গঠিত হয়, একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হন এবং তিনি এ সংস্থার চেয়ারম্যান হন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কোনো সিদ্ধান্তে এককভাবে গ্রহণ করেন না বা করতে পারেন না। এ জন্যই আপনাদের মাধ্যমে, আমরা বলতে চাই যে আমরা কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিইনি। সবাইকে বুঝতে হবে, এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা নিগূঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তারপরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সিইসি জানান, ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে তারা ঢাকার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখতে পান। অনিয়মের ধরন তুলে ধরে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তখন কমিশন থেকে ফোন দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোট কক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু ভোট কক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে? আনার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ তাদের গ্রহণ করতে দেখা যায়?নি।’

সিইসি জানান, উপনির্বাচনের অনিয়?মগুলো তদন্ত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে একটি কমিটি করা হয়েছে।

ইসির অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের এ কমিটির প্রতিবেদন পাওয়?ার পর গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচন বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।