Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 9:51 pm

সিএমএসএমই ও ভোক্তাঋণের মাশুল প্রত্যাহারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববারের লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় টাকার অঙ্কে লেনদেন কমে ৫০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল।

গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচক পতনে কোনো খাতে দর বাড়েনি। বরং এদিন পতনের সঙ্গে সব খাতে বিক্রির চাপ ছিল। ফলে তিনটি খাত ছাড়া সব খাতেই দর পতন হয়েছে। এদিন বিনিয়োগকারীরা বিমুখ ছিলেন ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে। এ কারণে শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি ছিল এই খাতে। ফলে আলোচ্য খাতটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, মার্কিন ভিসানীতি কার্যকরের ঘোষণার খবরে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছিল, সেগুলোর দামই গতকাল সবচেয়ে বেশি কমেছে। যেমন ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, অগ্রণী ইনস্যুরেন্স, ফু-ওয়াং ফুড প্রভৃতি। এসব কোম্পানির কোনো কোনোটির শেয়ারের দাম গত এক মাসে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। এ ছাড়া কিছুদিন ধরে শেয়ারবাজারের লেনদেন কেন্দ্রীভূত হয়ে গিয়েছিল বিমা খাতে। গতকাল এসব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হওয়ায় লেনদেন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সিরামিক, টেলিকমিউনিকেশন এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ৩ দশমিক ২০ শতাংশ। শেয়ারদর কমার দ্বিতীয় স্থানে ছিল সাধারণ বিমা খাত। খাতটিতে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। ২ দশমিক ৪০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত।

অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সাধারণ বিমা খাতে। খাতটিতে  ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া বিবিধ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

ডিএসইর তথ্য মতে, রোববার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩১০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ১৪৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪৮ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮০ পয়েন্টে।

ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক ৫ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৮ পয়েন্টে। ডিএস-৩০ সূচক ৯ দশমিক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে।

এদিন ৩২০টি কোম্পানির ৯ কোটি ৭৮ লাখ ১৫ হাজার ৮০৮টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে; যা টাকার অঙ্কে ৫০০ কোটি ৭৪ লাখ ৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার। অর্থাৎ লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমেছে।

ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার। এরপরের তালিকায় ছিল বিডি কম, খান ব্রাদার্স পিপি ব্যাগ, জেমিনি সি ফুড, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, মিরকাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক ৬৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৯৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৪৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৮০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৫০টির দাম।

দিন শেষে সিএসইতে ৮ কোটি ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৮২২ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৪ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ৭৮৫ টাকার শেয়ার।