নিজস্ব প্রতিবেদক: সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ সিগারেট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২০০১ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাসোসিয়েশনটি বাণিজ্য সংগঠন (টিও) নিবন্ধন পেয়েছিল। গত ২৮ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংগঠনটির নিবন্ধন বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে অ্যাসোসিয়েশনটির নিবন্ধন বাতিলের পেছনে ১২টি কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অ্যাসোসিয়েশনটি নিবন্ধনের বিধিবিধান পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সংগঠনটি সর্বশেষ ২০০১-০২ সালে বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) কার্যবিবরণী ও নিরীক্ষা প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছিল। আর নির্বাচনের কাগজপত্র দাখিল করেছিল ২০০৩-০৫ সময়ের। এর পর থেকে এ অ্যাসোসিয়েশন আর কোনো হালনাগাদ কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেনি।
গত ২৬ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অ্যাসোসিয়েশনটিকে কেন সুপ্ত বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, সেজন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। সংগঠনটি নোটিশেরও কোনো জবাব দেয়নি। এ ছাড়া সংগঠনটির ঠিকানায় কোনো কার্যালয় নেই, চিঠি পাঠালেও তা ফেরত আসে। পরে জুনে সুপ্ত বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। ১৮ আগস্ট যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) শুনানিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য ডাকলেও সংগঠনের কেউ উপস্থিত হননি।
সব মিলিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখছে, সংগঠনটি অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। আর তাই এর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। নিবন্ধন বাতিল করার প্রজ্ঞাপনটি আরজেএসসি, প্রধান আমদানি রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, এফবিসিসিআই, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও সংগঠনটির প্রধান কার্যালয় গুলশান ১-এর ৭ নম্বর রোডের ৭ নম্বর বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লম্বা সময় পর অ্যাসোসিয়েশনটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধন বাতিলের ফলে সংগঠনটির কেউ আর এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, ভোটও দিতে পারবেন না। প্রতিবছর বাজেটের আগে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে। সে সুযোগও এখন সংকুচিত হয়ে আসবে।
বাতিল সংগঠনটির অন্যতম সদস্য ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ শাবাব আহমেদ বলেন, ‘এটা ঠিক, সংগঠনটি তেমন কার্যকর ছিল না। ঢাকা টোব্যাকো, আলফা টোব্যাকোসহ আগের অনেক কোম্পানি এখন নেই। এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, ১৮ থেকে ২০টি সিগারেট কোম্পানি রয়েছে। নতুন করে আমরা আবার নিবন্ধনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করব।’
