Print Date & Time : 6 July 2025 Sunday 10:42 am

সিন্ডিকেট কি সরকার ও রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী!

সুধীর বরণ মাঝি:সিন্ডিকেটের ভয়াল থাবায় আজ জনজীবন বিপর্যস্ত। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দৈনন্দিন জীবনের অনেক প্রয়োজন কাটছাঁট করেও জীবন চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জীবনের বোঝা আজ বড্ড ভারী হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ জীবনের মৌলিকত্ব ভুলে গেছে। মানুষ আজ অসহায় হয়ে পড়েছে, জিম্মি হয়ে পড়েছে দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান সিন্ডিকেটের হাতে। তেল থেকে বেল, ওষুধ থেকে বিষ, ডাল থেকে চাল, ধান থেকে পাট, আলু থেকে জিরা, পেঁয়াজ থেকে আদা, ডিম থেকে আটা, খাতা থেকে বই, কলম থেকে বেতন, ইট-পাথর-রড-বালুÑকোনো কিছুই বাদ নেই। যেখানেই সিন্ডিকেটের হাত পড়েছে, সেখানেই ছড়িয়েছে আগুন। সেই আগুনের তাপেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মানুষের দেহ-মন। সহ্যের তো একটা সীমা থাকে, আর কত? যে-ই ইলিশ মাছের কোনো উৎপাদন খরচ নেই, সেই ইলিশের দাম যদি হাজার পেরিয়ে যায়, তাহলে আর থাকলটা কী! লোডশেডিংকে পুঁজি করে এক হাজার ৫০০ টাকার চার্জার ফ্যানও সাড়ে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন আবার ডেঙ্গুকে কেন্দ্র করে ১০০ টাকার স্যালাইন ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন খরচ নেই, কিংবা যেসবের উৎপাদন খরচ একেবারেই কম, সেসবের দাম কীভাবে আকাশছোঁয়া হয়, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। সিন্ডিকেটের কবলে বন্দি ৩০ লাখ শহিদের জীবনের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ। দেশের সর্বত্র সিন্ডকেটের দৌরাত্ম্য। সিন্ডিকেটের কাছে সরকার ও রাষ্ট্র যেন অসহায়! সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বাজারে মিলছে না ডিম, আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি। সরকারের বেঁধে দেয়া দামকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাচ্ছে সিন্ডিকেট ও করপোরেট ব্যবসায়ীরা। আর সেইসঙ্গে পালে হাওয়া তুলেছে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী ও টাকা পাচারকারী ঋণখেলাপিরা।

ধান থেকে চাল, চাল থেকে চামড়া, চামড়া থেকে পেঁয়াজ, পেঁয়াজ থেকে চাল ও মৌসুমি সবজিসহ সবখানেই সিন্ডিকেটের কারসাজি। এই সিন্ডিকেট আমাদের উন্নয়ন এবং অর্জনগুলোকে দিনের পর দিন প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলছে। দেশে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, এক ধরনের কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে এবং গুজব রটানোর মধ্য দিয়ে চোখের সামনে দিনের আলোয় পকেট কেটে নিয়ে যায় আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা। আমরা অসহায়ের মতো চেয়ে রই। কিছুই বলতে পারি না। প্রয়োজনের সামনে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে কূটকৌশলে আমাদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে ডাকাত সিন্ডিকেটের দল। সিন্ডিকেটের প্রভাবে বেড়েছে পারিবারিক কলহ, ভাঙন, সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও আত্মহত্যা। আমাদের উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, আমাদের অর্থনীতি এবং অর্জনগুলোকে গতিশীল রাখতে হলে সিন্ডিকেট ভাঙার বিকল্প নেই। সিন্ডকেট ভাঙার মধ্য দিয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠিত হবে। যে কোনো উন্নয়নশীল দেশে প্রধান অন্তরায় হলো সে দেশের সিন্ডিকেট কারসাজি, ঘুষ ও দুর্নীতি। এই কারসাজি একটি স্থিতিশীল সরকার ও রাষ্ট্রকে যে কোনো সময় বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে। এরা ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে সুবিধা লুটে নেয়। এই সিন্ডকেট কারবারিরা দেশ ও জাতির চরম শত্রু। সিন্ডিকেট কারবারের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে। এরা অক্টোপাসের মতো চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে দেশের অর্থনীতিকে। এদের এক জায়গায় আঘাত করলে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোয় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এরা গুজব রটায় সরকারের ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করতে। এরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে, মানুষ খুন করে, ধর্ষণ করে, নির্যাতন করে এবং দেশে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অধিক মুনাফা অর্জন করে। রাজধানীর রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে গ্রামের অটোচালক পর্যন্ত সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা অশান্ত করে রেখেছে জনজীবনকে। বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে আমাদের অর্থনীতিকে। এদের কারসাজি রোধ করতে না পারলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মুক্তি নেই। দিন দিন শ্রেণিবৈষম্য প্রকট হচ্ছে, বাড়ছে হতাশা, নৈরাজ্য, ঘুষ, দুর্নীতি, লুটপাট ও আয়বৈষম্য। আর তাই একশ্রেণির মানুষ দিন দিন আঙুল ফুলে বটগাছ হচ্ছে। রাতের আঁধারে হারিয়ে যাচ্ছে দেশের সচল গতিশীল অর্থনীতি। সিন্ডকেট জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, পারিবারিক ও সামাজিক সংকট তৈরি করে। এর ফলে পাবিবারিক কহল, ভাঙন ও দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনো সভ্য দেশে এই সিন্ডিকেট থাকতে পারে না। যেই সিন্ডকেটের কারসাজির কারণে এই দুর্ভোগ ও সংকট, গুটিকতক সিন্ডিকেট কালোবাজারির হাতে সমগ্র জনগণের দীর্ঘশ্বাস কোনো সভ্য মানুষ মেনে নিতে পারে না। গোটা দেশ ও দেশের ১৮ কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে এই সিন্ডকেট কারসাজিকারীদের কাছে। দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূরীকরণ এবং জাতীয় অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সিন্ডিকেটের কারসাজি রোধ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। আমাদের সামনে যে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান সংকট জনজীবনে চলছে, তার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এরা নিজেদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। এরা চাল নিয়ে চালবাজি করে, পেঁয়াজ নিয়ে পারসেন্টেজ করে, ধান নিয়ে ধান্ধাবাজি, চামড়া নিয়ে তেলেসমাতি এবং পরিবহন নিয়ে ভোগান্তিবাজি করে পুরো দেশটাকে জিম্মি করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এদের কাছে যেন আমরা দিন দিন অসহায় হয়ে পড়ছি। যে কোনো মূল্যে এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। রক্তের দামে কেনা এই দেশে সিন্ডিকেটের কোনো স্থান হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু শোষণমুক্ত সমাজরাষ্ট্র গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছেন, তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো এদেশে সিন্ডিকেট কারসাজি। দেশের প্রতিটি সংকট ও ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছে সিন্ডিকেট কুশীলবদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন এবং সহযোগিতা। জাতীয় উন্নয়ন স্বার্থে সিন্ডিকেট কুশীলবদের মুখোশ উšে§াচন করে এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এদের জাতীয় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিরা একটার পর একটা সিন্ডিকেট করে আর আমরা সুশীল সমাজ, মিডিয়া এগুলো নিয়ে টকশো করি, কেউ কেউ ফান ভিডিও করি। এরা আমাদের ব্যস্ত রাখে এদের এই অপকর্ম নিয়ে আলোচনায় আর সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিরা ব্যস্ত আমাদের পকেট কাটা নিয়ে। আমরা রাজপথে প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, দিন দিন আমাদের মেরুদণ্ড কুঁজো হয়ে যাচ্ছে আর সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিরা এর সর্বোচ্চ মুনাফা লুটে নিচ্ছে। রাষ্ট্র ও সরকারের দূরদৃষ্টি না থাকলে সিন্ডিকেট কুশীলবরা যে কোনো সময় সরকার ও রাষ্ট্রকে বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধ করতে হলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিন্ডিকেটের সক্রিয়তা একটি দেশের জন্য অশনী সংকেতও বটে। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রকে তার আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবেÑতারা যেন কোনোভাবেই আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারে। আইনজীবীদের এই বিষয়ে নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে হবে। শুধু টাকার জন্য নয়, দেশ ও বৃহৎ জনগণের প্রয়োজনে তাদের সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। কর্তৃপক্ষের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন দূর করা ও রাজনৈতিক নেতাদের নৈতিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে সিন্ডিকেট কুশীলব কালোবাজারিদের প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর মধ্য দিয়েই আজকের উন্নয়নশীল বাংলাদেশ আগামীর উন্নত বাংলাদেশে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে। আমাদের দেশ হবে সিন্ডিকেট, কুশীলব ও কালোবাজারিমুক্ত সোনার বাংলাদেশ, যেখানে থাকবে না দুশ্চিন্তা-দুঃশাসন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবন আজ প্রায় অতিষ্ঠ, দিশাহারা, সংসারজীবন ও পারিবারিক জীবনে তৈরি হয়েছে নানা সংকট। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য অনেকেই জীবন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, আবার অনেকে ঋণের দায় থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। দ্রব্যমূল্যের প্রতিদিনের এই ঊর্ধ্বগতিতে মনে হচ্ছে আমরা যুদ্ধের বাজারে আছি। যুদ্ধের বাজারেও দ্রব্যমূল্যের এত ঊর্ধ্বগতি হয় না। যতটুকু জানা গেছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও দ্রব্যমূল্য এত বাড়েনি। বর্তমানে খোলাবাজারে প্রতিকেজি মোটা চালের মূল্য ৫০ টাকা এবং খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকায়। দফায় দফায় বাড়ছে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এসবের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে ওঠে। দ্রব্যমূল্যের আর কতটা ঊর্ধ্বগতি হলে সরকার এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেবে জিরো টলারেন্স নীতিতে?

এক দেশে এক সরকার ছিলেন। সেই সরকার ধনী, মালিক শ্রেণি ও ব্যবসায়ীদের জন্য যা কিছু ভালো, সেটিই করতেন। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কোনো তোয়াক্কা করতেন না। জনগণ সরকারের এই অনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে এবং ওই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। পরবর্তী নির্বাচনে তারা তাদের পছন্দের নেতাকে ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসায়। দেশ এবার ভালোভাবেই চলছে। জনগণও বেশ খুশি। এখন ওই দেশের ব্যবসায়ী, মহাজন, সুদের কারবারি ও মুনাফাকারী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ে যায়। তারা আগের মতো মুনাফা করতে পারছে না। তাই তারা নতুন কৌশল অবলম্বন করে এবং সব ব্যবসায়ী মিলে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। নতুন কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নতুন সরকারের সঙ্গে দেখা করে। তারা সরকারকে নানা প্রলোভন দেখায় এবং প্রস্তাব দেয়Ñ‘আপনি আমাদের সঙ্গে থাকলে আমরা আপনাকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দেব।’ সরকার তাদের সরাসরি না বলে জানিয়ে দিলেন, ‘আমরা ভেবে দেখি, আপনারা আরেক দিন আসুন।’ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যেদিন সরকারের সঙ্গে দেখা করল, এর কয়েক দিন পর তারা চালসহ সব খাদ্যদ্রব্য কেজিপ্রতি দুই টাকা বাড়িয়ে দিল। জনগণ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। তারা সরকারের সঙ্গে দেখা করল। সরকার তাদের আশ্বাস দিয়ে বললেন, ঠিক আছে, বিষয়টি দেখছি। পরদিন তিনি ব্যবসায়ীদের ডাকলেন। ব্যবসায়ীরা বলল, ঠিক আছে, আমরা কেজিপ্রতি এক টাকা কমিয়ে দিই। সরকার বললেন, না, আপনারা কেজিপ্রতি আরও সাত টাকা বাড়িয়ে দিন। সরকারের এই প্রস্তাব শুনে খুশিতে ব্যবসায়ীদের চোখ কপালে উঠে গেল। তারা মহা খুশি। তারা যেখানে কমানোর প্রস্তাব করল, সরকার সেখানে তাদের আরও সাত টাকা বাড়িয়ে দিলেন। পরদিন চাল, ডাল, তেলসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের মূল্য কেজিপ্রতি সাত টাকা বেড়ে গেল। এবার জনগণ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গেল এবং সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করল। দেখা করে সরকারের আশ্বাস নিয়ে ফিরে এলো। পরদিন সরকার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে ডেকে বললেন, দ্রব্যমূল্য কেজিপ্রতি দুই টাকা কমিয়ে দিতে। ব্যবসায়ীরা সরকারের কথামতো দুই টাকা কমিয়ে দিয়ে গণমাধ্যমে প্রচার করে দিল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এখন নিয়ন্ত্রণে। জনগণও খুশি হলো। কেজিপ্রতি দুই টাকা কমিয়ে দিয়েছে। আমরা দ্রব্যমূল্যের এ রকম নিয়ন্ত্রণ চাই না। এভাবে দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি আর নিয়ন্ত্রণ খেলা আমরা চাই না। আমরা নাগরিকরা চাই সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার। ২০ টাকা বৃদ্ধি করে তিন টাকা কমানোÑএটি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মধ্যে পড়ে না। এভাবে নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে অর্থনীতি সঠিক পথে চলতে এবং দেশের অর্থনীতিও মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়াতে পারে না, বরং এটি জনগণকে শোষণের একটি কৌশলমাত্র। সরকার যদি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে ব্যর্থ হয়, তা হলে আগামী নির্বাচনে জনগণ এই সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আমরা চাই, সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কঠোরহস্তে দমন করবে। সরকার না চাইলে কোনো কিছুই রাষ্ট্রে টিকে থাকতে পারে না। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে সিন্ডিকেটের চালবাজির কাছে সরকারের সব অর্জন ভূলণ্ঠিত, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা চাই, সরকার আমাদের মতো সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আমরা চাইÑজনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ সোনার বাংলা হয়ে গড়ে উঠবে।

শিক্ষক

হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়

হাইমচর, চাঁদপুর