নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় চলছে তিন দিনব্যাপী ‘সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ, ২০২২’। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে এবং এক্সপোর দ্বিতীয় দিনে দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতা আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মেলা মুখরিত ছিল। আজ শেষ হচ্ছে তিন দিনের এ মেলা। আয়োজকরা বলছেন, আজও মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়বে।
উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সম্পূর্ণ উৎপাদনমুখী শিল্প হওয়ার দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশের সিরামিক শিল্প। ওয়ার্ল্ড ক্লাস রেঞ্জের নতুন নতুন টাইলস, স্যানিটারি আর টেবিল ওয়্যারের নান্দনিক প্রদর্শনী চলছে ‘সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ, ২০২২’-এর প্যাভিলিয়নগুলোয়। এখানে একই ছাদের নিচে সিরামিক পণ্যের বৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে পারছেন আগতরা। এক্সপোতে অংশগ্রহণকারীরা উন্নত গুনগত মান ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে বিশ্ববাজারে যেমন বাংলাদেশে তৈরি সিরামিক পণ্যের কদর বাড়ছে, তেমনি দেশীয় বাজারেও বাড়ছে চাহিদা।
আয়োজকরা জানান, প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক ও সরবরাহকারীরা তাদের নতুন পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিজেদের দক্ষতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে এই এক্সপোতে।
এক্সপোর মাধ্যমে দেশীয় সিরামিক পণ্য বাজারজাতকরণের পাশাপাশি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে রয়েছে স্পট অর্ডারের সুযোগ। তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী শেষ হবে ২৬ নভেম্বর।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, দেশে এরই মধ্যে সিরামিক, টেবিলওয়্যার, টাইল্স ও স্যানিটারিওয়্যারের ৭০টিরও অধিক শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বিক্রির পরিমাণ বার্ষিক প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। গত ১০ বছরে সিরামিক খাতে উৎপাদন বেড়েছে ২০০ শতাংশ এবং বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বিশ্বের প্রায় ৫০টিরও অধিক দেশে সিরামিক পণ্য রপ্তানি করে বছরে আয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এ খাতে রপ্তানি আয় বাড়ছে, বাড়ছে বিনিয়োগও। এ শিল্পে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার অধিক বিনিয়োগ রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এ খাতটির সঙ্গে জড়িত।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন বলেন, উন্নত গুণগত মান ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে তৈরি সিরামিক পণ্যের কদর বাড়ছে। শুধু তা-ই নয়, একই সঙ্গে নতুন নতুন বাজারও সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ, ২০২২’ দেশের তৃতীয় ও সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক এবং সরবরাহকারীরা তাদের নতুন পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিজেদের দক্ষতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন এ এক্সপোতে। এক্সপোর মাধ্যমে দেশীয় সিরামিক পণ্য বাজারজাতকরণের পাশাপাশি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো হবে। সেইসঙ্গে থাকবে স্পট অর্ডার।
তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী দর্শনার্থী ও ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সবার জন্য উš§ুক্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। মেলার প্রিন্সিপাল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আকিজ সিরামিকস, প্লাটিনাম স্পন্সরস শেলটেক সিরামিকস ও ডিবিএল সিরামিকস এবং কো-স্পন্সরস হিসেবে থাকছে মীর সিরামিক, আবুল খায়ের সিরামিক, বিএইচএল সিরামিক, এইচএলটি ডিএলটি টেকনোলোজি ও সাকমি।
ওয়েম কমিউনিকেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এক্সপোতে তিন দিনে থাকছে পাঁচটি সেমিনার, জব ফেয়ার, বিটুবি এবং বিটুসি মিটিং, রাফেল ড্র, আকর্ষণীয় গিফট্, লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, স্পট অর্ডার এবং নতুন পণ্যের মোড়ক উম্মোচনের সুযোগ।