সুদানের দারফুরে সংঘর্ষে নিহত শতাধিক

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সুদানের রাজধানী খার্তুমে বন্দুকযুদ্ধ এবং বিমান হামলার চতুর্থ সপ্তাহ চলছে। এ সময়ে সুদানের সংঘাতময় অঞ্চল দারফুরের একটি শহরে সশস্ত্র যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, খার্তুমে সুদানের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল একে অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র নেয়ার কয়েকদিন পর পশ্চিম দারফুরের জেনিনা শহরে লড়াই শুরু হয়।

সুদানের চিকিৎসকদের সিন্ডিকেট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জেনিনার হাসপাতালগুলো এখনও পরিষেবার বাইরে। আহতদের সঠিক সংখ্যা গণনা করা কঠিন।

ওই বিবৃতি অনুসারে, জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে আধা-সামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে খার্তুমে কমপক্ষে ৪৮১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। রাজধানীতে আহত বেসামরিক নাগরিকদের সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি।

সুদানে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় গত রোববার সুদানের যুদ্ধরত জেনারেলদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সৌদি আরবে হাজির ছিলেন জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মার্টিন গ্রিফিথস।

রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইতিহাসসহ দারিদ্র্যপীড়িত দেশটিতে ১৫ এপ্রিল সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়। এরপর থেকে একাধিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণা করা হলেও তা মানেনি কোনো পক্ষ।

সংঘর্ষে এ পর্যন্ত শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসব ঘটনা দেশটির মানবিক সংকটকে নতুন করে সামনে এনেছে। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে সুদান ছেড়ে পালিয়েছেন ১০ লাখের বেশি মানুষ।

সশস্ত্র সংঘাতের অবস্থান এবং ইভেন্ট ডেটা প্রকল্প অনুসারে, এ লড়াইয়ে অন্তত ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষ খার্তুম থেকে দারফুর এবং অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল সুদান পরিচালনা করছে। মূলত কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতা জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। জেনারেল আল-বুরহান সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং সে কারণে তিনিই দেশটির প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে দেশটির উপ-নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের কমান্ডার।

কয়েক দিন আগেও তাদের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতা থেকে সরাতে তারা দুজন এক হয়ে কাজ করেছেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সামনের দিনগুলোয় কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে, তা নিয়েই এ দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। সুদানের ভবিষ্যৎ এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে তারা ভিন্নমত পোষণ করেন।