সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে কালবৈশাখীর হানা, ঝড়- বজ্রপাতে নিহত ৮

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে নারী-শিশুসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিরা জানান, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে একই পরিবারের মা ও ছেলে-মেয়ে মারা গেছে। এছাড়া একই জেলার শাল্লা উপজেলায় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে বাবা ও ছেলের। এদিকে, হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বজ্রপাতে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
সুনামগঞ্জ
জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোলেমানপুর গ্রামের লন্ডনপ্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হারুন মিয়া। তিনি পরিবার নিয়ে টিনশেড ঘরে বাস করতেন। ভোরে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে একটি গাবগাছ ও আমগাছ তার ঘরের ওপর পড়ে।
এ সময় ঘরের ভেতর থাকা তার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৫) এবং দুই শিশু সন্তান মাহিমা আক্তার (৪) ও মো. হোসাইন (১) গাছ ও ঘরের আসবাবপত্রের নিচে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে জেলার শাল্লা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাল্লা গ্রামের বাসিন্দা মকবুল খাঁ (৪৫) ও তার ছেলে মাসুদ খাঁ (১২) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বাড়ির পাশের হাওর থেকে গরুর জন্য খড় আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহন হন তারা।
পরে স্থানীয়রা তাদের হাওর থেকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বজ্রপাতে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের এড়ালিয়া গ্রামের শামসুল মিয়ার ছেলে আলমগীর মিয়া (২৬), একই উপজেলার কাতারী মহল্লার আক্কল আলীর ছেলে শিক্ষার্থী হুসাইন মিয়া (১২) ও জাতুকর্নপাড়া মহল্লার আব্দুর রহমানের মেয়ে জুমা বেগম (১৩)।
বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরান হোসেন জানান, নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ তাদের নিজ নিজ বাড়িতে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তাদের দাফন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আকস্মিক ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় ধান কাটতে গিয়ে আলমগীর মিয়া, ঘাস কাটতে গিয়ে হোসাইন ও পেঁপে পাড়তে গিয়ে জুমা বজ্রপাতের শিকার হন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান জুমা বেগম। আহত অবস্থায় হোসাইন ও আলমগীর মিয়াকে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার (পিআইও) মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।