Print Date & Time : 12 September 2025 Friday 6:06 pm

সূচকের উত্থানের দিন বিবিধ খাতের লেনদেন সর্বোচ্চ

মো. আসাদুজ্জামান নূর: চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসে পতন দেখার পর গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) উত্থান দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল প্রায় সমানসংখ্যক সিকিউরিটিজের দর হ্রাস-বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সূচকে যোগ হয়েছে ৩০ পয়েন্ট। যদিও আগের তিন দিনে সূচক থেকে হারিয়েছে ১৪৬ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। সূচক বাড়লে তা স্বস্তি ফেরাতে পারেনি বিনিয়োগকারীদের মনে।

দিন গড়ানোর সঙ্গে বিনিয়োগ বেড়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে সূচক। দিনশেষে দর হারানো ও দর বৃদ্ধি কোম্পানির সংখ্যা ছিল সমানসংখ্যক। গতকাল লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ১৫৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৬০টির। এতে ওঠানামার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত সূচক ইতিবাচক থেকে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল লেনদেনের শুরুতে সূচক বেড়ে কিছুক্ষণ পর তা আবার কমে গেলে টানা চতুর্থ দিন সূচক পড়ার শঙ্কা জাগে। তবে দুপুর ১টার পর থেকে শেয়ারগুলো কিছুটা দর ফিরে পেতে থাকলে শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন।

গত সোমবার আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হওয়ার পরদিন আবার তা হাজার কোটি টাকার বেশি উঠলেও গতকাল তা আবার নেমেছে তলানিতে। কোনো রকমে ৮০০ কোটির ঘর অতিক্রম হয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮০৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট, যা আগের দিনের চেয়ে ২৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

গতকালের লেনদেনেও ব্যাংক, ওষুধ, বস্ত্র প্রভৃতি খাতের আধিপত্য দেখা গেছে। যদিও দীর্ঘদিন পর গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বিবিধ খাত। ১৪১ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া এ খাতটির অবদান দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গতকাল এ খাতের নয়টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কমেছে চারটির।

দীর্ঘদিন ধরে লেনদেনের শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাত গতকাল দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে। গতকালের লেনদেনে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ অবদান রাখে খাতটি। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। গতকাল এ খাতের ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ১৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল দশটির।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের অবদান দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গতকাল এ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। এদিন ১৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। অন্যদিকে শেয়ারদর কমেছে ৯টি কোম্পানির ও দর রাখতে পেরেছে দুটি কোম্পানি।

চতুর্থ অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে কমতে দেখা গেছে। গতকাল সাত দশমিক ৪৩ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ১৭টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। এর বিপরীতে শেয়ারদর হ্রাস পেয়েছে ৩৪টি কোম্পানির ও অপরিবর্তিত ছিল আটটির। আগের কার্যদিবসে এ খাতের অবদান ছিল আট দশমিক ১৬ শতাংশ।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা খাদ্য খাতের লেনদেনও আগের কার্যদিবসের চেয়ে কমতে দেখা গেছে। তবে লেনদেনে ট্যানারি, জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আইটি প্রভৃতি খাতে ভালো লেনদেন হয়েছে।

গতকাল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পাশাপাশি টানা দর সংশোধনে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির ইতিবাচক প্রবণতায় সূচকের পতন থেমেছে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর বৃদ্ধির কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট। বেক্সিমকোর কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৬ দশমিক ৮ পয়েন্ট। এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, ইউনিলিভার, স্কয়ার ফার্মা, রেকিট বেনকিজার, গ্রামীণফোন, ডেল্টা লাইফ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও বিএসআরএম লিমিটেডও সূচকে যোগ করেছে পয়েন্ট। সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানিই সূচক বাড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।

গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৮৬৮ পয়েন্টে, ডিএসইএস পাঁচ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪৬২ পয়েন্টে ও ডিএস৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৫৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।