নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : দেশের পুঁজিবাজারে তেজিভাব দেখা গেছে। সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে গতকাল বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। বিপরীতে দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতেও লেনদেন বেড়েছে। এদিকে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৭৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে। সেইসঙ্গে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৯টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে ৬৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল। এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২২১টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৪২ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ২২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে ৩৫টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৮৯টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ১০ হাজার ১৮১ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিন শেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৩২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৯৪টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ২৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসই ও সিএসই উভয় পুঁজিবাজারেই লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।