নিজস্ব প্রতিবেদক: এশিয়ার পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারা, দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনে বিশ্বের স্বনামখ্যাত বিনিয়োগকারীদের পদচারণা আর পুঁজিবাজারে গতি আনতে দায়িত্বশীলদের তৎপরতায় গতিশীল হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। ঈদ-পরবর্তী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও সেই ধারা দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইতে গতিশীলতা দৃশ্যমান ছিল। তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমার পরও গতকাল দিনশেষে পুঁজিবাজারের মোট লেনদেন ৫৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
ডিএসইর দেয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৫ হাজার ২০৫ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে; যা এর আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৯ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বেশি। ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ‘ডিএসইএস’ ৩ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে আগের কার্যদিবসের চেয়ে বেড়েছে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির সূচক ‘ডিএস৩০’। দিনশেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৯২৭ পয়েন্টে; যা এর আগের দিনের তুলনায় ৫ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বেশি।
এদিন ডিএসইতে মোট ৫৪০ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে ৫২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল। এদিকে গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪৯টির। এর বিপরীতে কমেছে ১৬৮টি শেয়ার ও ইউনিটের দর। দিনশেষে ৭৮টি কোম্পানি ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১০ সালে স্মরণকালের ভয়াবহ ধসের পর থেকে ধুঁকছে দেশের পুঁজিবাজার। সাধারণ বিনিয়োগকারী বাজারবিমুখ হয়ে পড়ছে। গত প্রায় দেড় দশকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অদূরদর্শী পদক্ষেপ, তারল্য সংকট, অনিময়-জালিয়াতির মাধ্যমে বিতর্কিত কোম্পানি তালিকাভুক্তি এবং বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার নিয়ে কারসাজির কারণে বাজার অস্থির হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশকে (বিএসইসি) ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরুর পর বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। একইভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও (ডিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানির খোঁজখবর নেয়ার বিষয়ে তৎপর হয়েছে। এসব কারণেই মূলত গতি ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। এশিয়ার শেয়ার মার্কেটের ঊর্ধ্বগতিও বাজারকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখছে।
অন্যদিকে, দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৯ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়েছে। দিনশেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৮ হাজার ৮৫৯ পয়েন্টে। সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭ দশমিক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ১৪ হাজার ৫৪৭ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২.২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৯৫০ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৩০ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমেছে ১২ হাজার ৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ২১৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০৫টি কোম্পানির, কমেছে ৮০টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৩১টির। সিএসইতে ৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।