Print Date & Time : 12 September 2025 Friday 9:45 pm

সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর দেশের পুঁজিবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস গতকাল বুধবার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকার পরও মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস সূচক বাড়ল। আর ভোটের পর লেনদেন হওয়া সাত কার্যদিবসের মধ্যে ছয় কার্যদিবস সূচক বাড়ল।

ধারাবাহিকভাবে মূল্যসূচক বাড়লেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। দিনের পর দিন এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট খুব একটা লেনদেন হচ্ছে না। ফলে দাম বাড়া বা কমার তুলনায় দাম অপরিবর্তিত থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি রয়েছে। আবার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেন না হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থও দীর্ঘদিন ধরে এক জায়গায় আটকে রয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক চার পয়েন্ট বেড়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

কিন্তু এরপরই হঠাৎ একের পর এক বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দামে ঢালাও পতন হওয়ায় সার্বিক বাজারেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেয় বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। অবশ্য এরপরও সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৭১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৫টির, আর ১৮৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম কমার তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিমা কোম্পানি ছিল ৪৫টি। বিপরীতে দাম বাড়ার তালিকায় বিমা কোম্পানি ছিল মাত্র একটি।

প্রায় সবকটি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১১৪ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় সাত পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ১৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৬০ কোটি আট লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বীকন ফার্মার শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ৪১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের ২৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল পাওয়ার গ্রিড।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑবিচ হ্যাচারি, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।

অন্য পুঁজিবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমে ৬০টির এবং ৭৬টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।