নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকদের সেট টপ বক্স সরবরাহ করা হবে। এ সময়ের মধ্যে সেট টপ বক্স না বসালে ১ ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকদের টেলিভিশন দেখা বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল সচিবালয়ে কেব্ল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) ও ডিস্ট্রিবিউটরদের নিয়ে সভার পর তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় সরকারি নির্দেশনা মেনে দেশে ক্লিনফিড চালু করতে সহায়তা করায় কেব্ল অপারেটরদের ধন্যবাদ জানান তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের কেব্ল নেটওয়ার্কিং পদ্ধতি ডিজিটাল করা হবে। আর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহরের সঙ্গে পুরোনো ১১টি জেলা শহরের কেব্ল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করা হবে।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে কেব্ল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল করা হবে। কেব্ল অপারেটররা জানিয়েছেন, তারা ডিজিটাল ডিভাইস বসিয়েছেন। এখন গ্রাহকদের সেট টপ বক্স সরবরাহ করা হবে। গ্রাহকরা এ সেট টপ বক্স না বসালে ৩০ নভেম্বরের পর টেলিভিশন দেখার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় হবে। কেব্ল অপারেটররা বলেছেন সময় বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
সেট টপ বক্স নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেট টপ বক্সের দাম কেব্ল অপারেটররা একসঙ্গে নেবেন না, সেটি ১২ থেকে ৩০ কিস্তিতে নেবেন। এটা গ্রাহকদের সঙ্গে তাদের বিষয়, এটা সরকার ঠিক করে দেবে না। সরকার থেকে মনিটরিংয়ের প্রয়োজন নেই। কারণ চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই। চাহিদা বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রাহক যদি চায় কেব্ল অপারেটরের কাছ থেকে না নিয়ে নিজেই বাজার থেকে কিনে নিতে পারবেন। সেট টপ বক্স নিয়ে কাউকে মনোপলি করতে দেব না।
তিনি বলেন, এর আগে ২ সেপ্টেম্বর সিদ্ধান্ত হয়েছিলে ১ অক্টোবর থেকে ক্লিনফিড বাস্তবায়ন করতে হবে। ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের সব কেব্ল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করতে হবে। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর ছাড়াও কুমিল্লা, বগুড়া, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, রাঙামাটি ও কক্সবাজার জেলা শহরে কেব্ল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজ করতে হবে। এসব এলাকার সঙ্গে যশোর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও পাবনাসহ সব পুরোনো জেলা শহরগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসবের অগ্রগতি দেখে পুরো দেশ কখন করতে পারবÑসেটি নিয়ে আগামী মাসে বসে সিদ্ধান্ত নেব। সব টিভিতে এ বিষয়ে প্রচারণা চালানো হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দেশ ডিজিটাল হলেও এখনও কেবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটাল হয়নি জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতে হয়ে গেছে, নেপালে ব্যাপক আকারে হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এটি করলে সবার জন্যই সুবিধা। গ্রাহকরা ভালোভাবে টেলিভিশন দেখতে পাবে। ডিজিটাল না হওয়ার কারণে সরকার প্রতি মাসে ১২৫ থেকে ১৫০ কোটি টাকা ট্যাক্স পাচ্ছে না। মাসে যদি ১২৫ কোটি টাকা লস হয় বছরে সরকার দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, কেব্ল অপারেটিংয়ের সঙ্গে যারা যুক্ত তারাও কিন্তু গ্রাহকদের কাছ থেকে যেটুকু পাওয়ার কথা তা পায় না। কারণ কেব্ল অপারেটররা ফিড অপারেটরের মাধ্যমে পরিচালনা করে। দেখা যায় ফিড অপারেটরের গ্রাহক আছে ১০ বা ৫ হাজার কিন্তু তারা হিসাব দেয় এক হাজারের। এভাবে তারাও বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের টিভি কর্তৃপক্ষও নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। তারাও জানছে না কত দর্শক তাদের টেলিভিশন দেখছে। যখন নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হয়ে যায়, তখন কোনো চ্যানেল যদি পে-চ্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায় তাদের পক্ষে সেটা সম্ভব হবে।