সেতুমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ২১ জনের প্রাণহানিসহ সব দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করে বিএনপি। গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির সভায় এ অভিমত জানানো হয়। সভায় সেতুমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিসহ গৃহীত আরও কিছু সিদ্ধান্তের বিষয় গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, এ দুর্ঘটনার জন্য সরকারের সড়ক বিভাগ সম্পূর্ণ দায়ী। এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সব দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।

দলটির স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়, ১৯ মার্চ পদ্মা সেতুর শিবচর প্রান্তে বাসের ফিটনেস সার্টিফিকেট না থাকা সত্ত্বেও এবং বাসটির রুট পারমিট বাতিল হওয়ার পরও মহাসড়কে যাত্রী পরিবহন করে। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২১টি প্রাণ ঝরে যায়। এ ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটি গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। দলটি এ দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত

কামনা করে এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানায়।

স্থায়ী কমিটির সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সরকার দলীয় আইনজীবী ও পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলা, মামলা নিয়েও আলোচনা হয়। সভা মনে করে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের এ আচরণ প্রমাণ করেছে, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না।

সভায় আইনজীবী সমিতির নির্বাচন কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সরকার দলীয় আইনজীবী ও পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলা, ভাঙচুর, গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা এবং ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনী প্রহসনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

স্থায়ী কমিটি মনে করে, আওয়ামী লীগ পুলিশকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্টের পবিত্রতা ক্ষুণœ করেছে।

সোমবারের সভায় পবিত্র হজের প্যাকেজের সর্বনি¤œ টাকার পরিমাণ হজ পালনে ইচ্ছুক ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমানদের নাগালের বাইরে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

সভা মনে করে, পাশের দেশ ভারত ও পাকিস্তানে এ অর্থের পরিমাণ প্রায় অর্ধেকের মতো। স্থায়ী কমিটি প্যাকেজের অর্থের পরিমাণ কমিয়ে এনে সাধারণ নাগরিকদের আর্থিক সক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

এছাড়া গত রোববার রাতে রাজধানীর বনানী ক্লাব থেকে প্রায় ৫১ জনকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার ও পরে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সভা মনে করে, বিরোধী আন্দোলনকে দমন করার জন্য অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার এ ধরনের হীন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। অবিলম্বে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা হয়।

সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ অংশ নেন বলে জানানো হয়।