নিজস্ব প্রতিবেদক: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) উদ্ভাবিত দেশের প্রথম স্মার্টফোনভিত্তিক ‘সূর্যবিদ্যুৎ’ অ্যাপের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে সারাদেশ। চাহিদা বাড়লে মাঝে মাঝে সংকট হয়, তখন মানুষ কষ্ট পায়। এতে সরকারও কষ্ট পায়। বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য এ সমস্যা হয়েছিল। সেই সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।’
ইয়াফেস ওসমান আরও বলেন, ‘আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুযায়ী আমি মনে করি, আমরা যদি শক্তি (বিদ্যুৎ) দিতে পারি, মানুষ জীবন বদলে ফেলতে পারে।’
২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল (আরপিভি) উদ্বোধন করেন। আরপিভি ইনস্টলেশন বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম পারমাণবিক চুল্লির ৩৩তম দেশে পরিণত করেছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটও অনুরূপ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে।
গত বছরের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. শওকত আকবর বলেছিলেন, ‘আমরা লক্ষ্য পূরণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা ২০২৩ সালে ট্রায়াল ভিত্তিতে উৎপাদন শুরু করতে পারব, তবে সরবারহে যেতে পারব ২০২৪ সালে। এখন প্রথম ইউনিটের কাজের শেষ পর্যায়ে আছে, আগামী বছরের অক্টোবরে ট্রায়াল শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জনশক্তি প্রশিক্ষণসহ মোট ব্যয় হচ্ছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশ অর্থায়ন করছে রাশিয়া।
বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পর থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ন্যূনতম ৬০ বছরের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রচলিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্থনৈতিক জীবন সাধারণত ২৫ বছর।
দীর্ঘস্থায়ী পরিষেবার পাশাপাশি প্ল্যান্টটি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদনে অবদান রাখবে। বর্তমানে প্রকল্পে ৩৩ হাজার লোক কাজ করছেন, তাদের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার বিদেশি নাগরিক।