সেবা খাতে রেমিট্যান্স আহরণে হয়রানি বন্ধে আন্তরিক হোন

দেশে সম্মানজনক কর্মসংস্থান নিয়ে বড় সমস্যায় দক্ষ তরুণ জনশক্তি। তাদের একটি অংশ নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে। তাদের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তারা দেশে বসে বিদেশে কাজ করছে। দেশের সুনামও কুড়িয়ে আনছে। কিন্তু অনেক দিন ধরেই শোনা যাচ্ছে, কাজের পারিশ্রমিক আনতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।

শুক্রবার শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করল বাংলাদেশ ব্যাংক: সেবা খাতের রেমিট্যান্স আনতে হয়রানির শিকার গ্রাহক’ শীর্ষক প্রতিবেদন আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে ভাগ্যোন্নয়নের চেষ্টায় রত তরুণদের মনে আশার সঞ্চার করবে বলেই ধারণা।

গত বুধবার ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে গ্রাহক হয়রানি বন্ধে সতর্ক করেন  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সেবা খাতের ২০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ আয় দেশে আনতে ঘোষণা লাগবে না। গত ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এমন নির্দেশনা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ব্যাংক ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় তথ্য ও ফরম সি’তে ঘোষণার জন্য গ্রাহকদের হয়রানি করছে।  বিদেশে কর্মরত প্রবাসীরা কোনো ঘোষণা ছাড়াই যে কোনো পরিমাণের অর্থ দেশে পাঠাতে পারেন। তবে বাংলাদেশে বসে যারা বিদেশে কাজ করেন, তাদের অর্থ আনতে ঘোষণার প্রয়োজন হয়। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে ‘সি-ফরম’-এ আয় কোথা থেকে আসছে, পরিমাণ, কাজের ধরনসহ অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণসহ তথ্য দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঘোষণা লাগবে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। তারপরও সম্প্রতি কিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে সীমার মধ্যে এ রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রেও গ্রাহকদের হয়রানি করার বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব অভিযোগ যাচাই করে সত্যতা পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ। বিভাগটি একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে ব্যাংকার্স সভায়।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, সীমার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা আনার ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার কোনো বিষয়ই নেই। অথচ কিছু ব্যাংক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে রেমিট্যান্সের সুবিধাভোগীদের ‘সি’ ফরমে ঘোষণা দিতে বাধ্য করছে। বিদ্যমান ডলার সংকটে যখন ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্সের নিয়ম-কানুন যথাসম্ভব শিথিল করা দরকার, সেখানে ব্যাংকগুলো নিয়মের মধ্যে রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা গ্রহণের নামে গ্রাহকদের হয়রানি করছে, এটা দুঃখজনক। গভর্নরের নির্দেশনা যাথারীতি পরিপালিত হলে হয়রানি ছাড়াই ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্সের অর্থ দ্রুত গ্রাহকের অনুকূলে বিতরণ সম্ভব হবে। সফটওয়্যার, ওয়েব ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিংয়ের সেবা রপ্তানির আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনতে যেন সেবাগ্রহীতারা বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সাররা উৎসাহিত হন, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ব্যাংকাররা দায়িত্বশীল হলে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স আনবেন না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত হবে, গভর্নরের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা দেয়া।