Print Date & Time : 1 August 2025 Friday 6:25 am

সেমিনারের সঞ্চালনায় ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ রপ্তানিমুখী

শিল্পের জন্য স্বল্প সুদে অর্থয়ান এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে একটি সহায়ক বিনিময় হার নির্ধারণ করার ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময় নেই। সরকার নীতি সহায়তা দিচ্ছে। তবে বেসরকারি খাত সামনের দিনগুলোয় একটি টেকসই দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা প্রাপ্তির প্রত্যাশা করে।

তিনি আরও বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ যত সহায়ক হবে রপ্তানি খাতে তত বেশি সাফল্য আসবে। সেই সঙ্গে শুল্ক হার বেশি থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ব্যাহত হয়। তাই সহায়ক রাজস্ব নীতিমালার কোনো বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বিজিএমইএ পরিচালক ও উর্মি গার্মেন্টস লিমিটেডর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ এবং সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী অংশগ্রহণ করেন।

বিজিএমইএ পরিচালক ও উর্মি গার্মেন্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই পোশাক খাতের প্রণোদনা প্রত্যাহার করা হলো। যদিও এ খাতের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি  বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এমতাবস্থায় তিনি এ খাতের প্রণোদনা সুবিধা ২০২৬ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য দেশে বৈদেশিক মুদ্রার একটি সহায়ক এক্সচেঞ্জ রেট থাকা দরকার বলে মতামত দেন তিনি।

সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘তৈরি পোশাক ছাড়া পাট, চামড়া ও চা প্রভৃতি পণ্যে রপ্তানি তেমন উল্লেখজনক নয়। কারণ হলো, নীতি সহায়তা ও সক্ষমতার অপ্রতুলতা। বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলো কীভাবে তাদের রপ্তানিকারকদের সহায়তা দিচ্ছে, তা অনুসরণ করার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বৈদেশিক মুদ্রার একক বিনিময় হার নির্ধারণের ওপর জোরারোপ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা পরিচালন ব্যয় হ্রাস করতে না পারলে আমাদের উদ্যোক্তারা সক্ষমতা হারাবেন। দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আশ্বাস বাড়ালে দেশি-বিনিয়োগ বাড়বে।’

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন, ‘তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও পাদুকা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট ও পাটপণ্যের মতো শিল্পগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এফএমসিজি, প্লাস্টিক পণ্য, হালকা-প্রকৌশল, হালাল পণ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রপ্তানি বৃদ্ধিতে মনোযোগী হতে হবে। সম্ভাবনাময় খাতসমূহের বিকাশে ক্রেডিট ইন্সু্যুরেন্স, এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল লোন প্রভৃতি হতে ঋণপ্রাপ্তির বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে আরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করেন।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে অংশগ্রহণকারীরা জ্বালানিসহ অন্যান্য সেবাপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা, বেকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘হাই এন্ডেড’ খাতে বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং পণ্য প্রসারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পণ্য মেলার আয়োজনের প্রস্তাব করেন। এছাড়া কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজতকরণ শিল্পটিকে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলার শিল্পে রূপান্তরিত করা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

ডিসিসিআই সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।