মিজানুর রহমান, সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় বোরো চাষের ধুম পড়েছে। মাঠে মাঠে কৃষকেরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। মাঠের পর মাঠ জুড়ে কোথাও কৃষকেরা বীজতলা থেকে চারা তুলছেন, কোথাও চলছে জমি তৈরি কাজ, কোথাও সেচযন্ত্রের সাহায্যে জমিতে সেচের পানি তোলা হচ্ছে, কোথাওবা চলছে চারা রোপণের কাজ। কৃষক ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের বিন্দুমাত্র ফুরসত নেই।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে এবং পৌর এলাকার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরে হয়েছে সাত হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে।
গত শনিবার উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ও পৌরসভার এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে কৃষক ও কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরোর চাষাবাদ হবে। কারণ বর্তমানে মাঠে রবিশস্য আলু, সরষে ও গমক্ষেত ছাড়া কোথাও এক চিলতে জমি খালি নেই। কোনো কোনো জমিতে বোরোর চারা রোপণ করা হয়ে গেছে এরই মধ্যে। আবার কোনো জমি চারা লাগানোর জন্য তৈরি করছেন কৃষকেরা। মাঠে মাঠে এখন ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রের আওয়াজ। এসব সেচযন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা পানির দৃশ্য। সেচযন্ত্রের শব্দ ও কদর্মাক্ত জমি কিংবা বীজতলায় সারিবদ্ধ কৃষকদের গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে গ্রামাঞ্চলের মাঠের পর মাঠ।
গত কয়েক দিনে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বীজতলা দিয়ে চরম আতঙ্কে পড়েছিলেন উপজেলার কৃষকেরা। কিন্তু কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যথাযথ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা এবং কৃষকদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কারণে কুয়াশায় বীজতলা তেমন একটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি এবারে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ মো. সালাহউদ্দিন জানান, উপজেলা এখনও বোরোর চারা রোপণের কাজ পুরোদমে শুরু হয়নি। তবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে উপজেলায় পুরোদমে বোরার চারা রোপণের কাজ শুরু হবে। তিনি জানান, গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সৈয়দপুর উপজেলায় ১৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো চারা রোপণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পুরো বোরো আবাদ মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে এবং কীটপতঙ্গ ও রোগবালাইয়ের আক্রমণসহ কোনো রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় না দেখা দিলে এবারে উপজেলায় বোরোর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।