নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবিরসহ ৯ জনকে দুই ধারায় মোট ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আরও একজনকে দেয়া হয়েছে দুটি ধারায় মোট আট বছরের কারাদণ্ড। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন গতকাল এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
হুমায়ুন কবির ছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, নির্বাহী কমকর্তা (সাময়িক বরখাস্ত) মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সফিজ উদ্দিন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল হোসেন, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ননী গোপাল নাথ, প্যারাগন প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের এমডি মো. সাইফুল ইসলাম রাজা, পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন ও মণ্ডল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মকবুল হোসেনের একটি ধারায় ১০ বছর এবং অন্য ধারায় ৭ বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে।
দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তাদের ১০ বছর করে কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া আরেক ধারায় তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে রায়ে। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক শেখ আলতাফ হোসেনকে একটি ধারায় ৫ বছর এবং অন্য ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে তাকে ৫ বছর কারাভোগ করতে হবে। পাশাপাশি আরেকটি ধারায় ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত থাকায় শেখ আলতাফকে ওই ধারার তুলনামূলক কম শাস্তি দেয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় মাইনুল হক, সফিজ উদ্দিন, শেখ আলতাফ ও কামরুল
হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়; পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
রায়ে আদালত বলেছে, আত্মসাৎ করা ৫ কোটি ১৯ লাখ ৭৭ হাজার ৯০০ টাকা আসামিদের কাছ থেকে সমহারে আদায় করে রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দিতে হবে।
সরকারি কর্মচারী হয়েও ‘বিশ্বাসভঙ্গ, সম্পত্তি আত্মসাৎ, প্রতারণা ও অপরাধে সহায়তা করার দায়ে’ তাদের এ সাজা দেয়া হয় বলে দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম জানান।
তিনি বলেন, ‘দণ্ডিতরা ব্যাংকের নীতিমালা অগ্রাহ্য করে প্রতারণার মাধ্যমে মালামাল রপ্তানি না করেই ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ খুলে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা প্যারাগান প্রিন্টিংয়ের নিজস্ব হিসাবে (অ্যাকাউন্টে) জমা দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন।’
২০১৩ সনের ১ জানুয়ারি রমনা থানায় এ মামলা করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। পরের বছরের ২২ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোছা. সেলিনা আক্তার মনি।