Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 6:33 pm

স্টকের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিলে বাড়তি কর লাগবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিটেইনড আর্নিংয়ের ওপর কর আরোপের প্রস্তাবে পরিবর্তন এনেছে সরকার। একই সঙ্গে স্টকের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিলে কোম্পানিগুলো প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখিত বাড়তি কর দিতে হবে না।
গতকাল জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে অর্থবিল উত্থাপনকালে এসব সংশোধনীর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইভাবে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফার ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদানে ব্যয় করার নির্দেশনার কথাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মন্তব্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আমাদের ভাবতে হবে। কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীও নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমি প্রস্তাব করছি যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশে ওপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রস্তাব করতে হবে।’
এর আগে, প্রস্তাবিত বাজেটে কোম্পানি স্টক ডিভিডেন্ড দিলে সেই কোম্পানিকে ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের কথা বলা হয়েছিলো। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রস্তাবে সংশোধন আনা হয়েছে। এতে স্টক ডিভিডেন্ডের সঙ্গে সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে আর কোনো বাড়তি কর গুনতে হবে না।
এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করবর্তী মুনাফার ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভসহ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করার সুযোগ রাখা হয়েছে। মুনাফার বাকি ৩০ শতাংশ নগদ লভাংশ হিসেবে দিতে হবে। এ নির্দেশনা মানতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির রিটেইন আর্নিংস ও রিজার্ভ হিসেবে স্থানান্তর করা মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে এ বিষয়ে আরও বলেন, ‘নগদ লভ্যাংশ উৎসাহিত করায় আমরা আরও প্রস্তাব করেছিলাম যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে। এ বিষয়েও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা কেউ কেউ আপক্তি করেছেন। সে প্রেক্ষাপটে এ ধারাটির আংশিক সংশোধনপূর্বক আমি প্রস্তাব করছি যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতি বছরে রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভের মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।’
প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি হলে ১০ শতাংশ হারে কর আরোপের কথা বলা হয়েছিল। শেষ পর্যায়ে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে কোম্পানির মুনাফার অর্থ বণ্টনের সিলিং নির্ধারণ করা হলো।
আর পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, ‘সমৃদ্ধ আগামীর’ প্রত্যাশা সামনে রেখে আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট ১৩ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ১৮ শতাংশ বেশি।