নিজস্ব প্রতিবেদক: শেষের পথে দ্বিতীয় দফার সর্বাত্মক লকডাউন। কভিড-১৯ বিস্তার রোধে চলমান লকডাউন শিথিল করার পর বৃহস্পতিবার গণপরিবহন চালু হলে জনসাধারণ যদি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলে, তাহলে আবার কড়াকড়ি আরোপ করা হবে বলে সতর্ক করেছেন ওবায়দুল কাদের।
গতকাল ধানমণ্ডির এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ হুশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, লকডাউনের পর গণপরিবহনে চলাচলের সুযোগ দেয়া হলে সবাইকে স্বাস্ববিধি মেনে চলতে হবে। তা না হলে সরকার আবারও কঠোর লকডাউন দিতে বাধ্য হবে।
শপিং মল, দোকানপাট ও বাজারগুলোয় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান তিনি।
দেশে কভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকার ৫ থেকে ১১ এপ্রিল একগুচ্ছ বিধিনিষেধের আওতায় লকডাউন দেয়। এরপর এর মেয়াদ ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
পরে বিধিনিষেধ আরও কঠোর করে ১৪ এপ্রিল থেকে জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়, যা সর্বাত্মক লকডাউন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এ লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল করা হয়। এ সময় গণপরিবহনও বন্ধ রয়েছে। তবে এর মধ্যে শুক্রবার ‘জীবন-জীবিকার’ কথা চিন্তা করে রোববার থেকে দোকান ও শপিং মল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
ওই দিনই জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ২৮ এপ্রিলের পর থেকে লকডাউন শিথিল করার কথা বলেন। পরদিন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণপরিবহন চালু করার কথা জানান।
গতকাল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে ‘খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণে’ ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ত্রাণ ও নগদ সাহায্য নিয়ে যারা অনিয়ম করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা উচিত, এরাই সাহায্য পাওয়ার যোগ্য।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় বরগুনায় দুই হাজার খাবার স্যালাইন ও ২০০ পুশ স্যালাইন এবং বরিশাল বিভাগের অন্য জেলার জন্য মোট সাত হাজার খাবার স্যালাইন ও ৫০০ পুশ স্যালাইন ছাত্রলীগের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে বিএনপির আবারও অপপ্রচারে নেমেছে বলে অভিযোগ করে কাদের বলেন, প্রথম ডোজের মতো দ্বিতীয় ডোজের টিকাও যথাসময়ে জনগণ গ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ। যারা সংশয়বাদী তারা সবকিছুতেই অনিশ্চিয়তা খুঁজে বেড়ায়, ছড়িয়ে দেয় বিভ্রান্তি। এ বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার বিএনপির নতুন কোনো রোগ নয়, তারা অনেক আগে থেকেই এ ভাইরাসে আক্রান্ত।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, লকডাউন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব যতটুকু গবেষণা করেছেন, তা বন্ধ করে জনগণকে সচেতন করার জন্য দু-একটি বক্তব্য রাখলেও তা করোনার সংক্রমণ রোধে সামান্যতম হলেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখত।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি প্রথমে বলেছিল, লকডাউন চাই, পরে বলে লকডাউন সমাধান নয়, আবার বলছে লকডাউন পরিকল্পিত নয়। কিন্তু এখন বলছে লকডাউনের নামে নেতাকর্মীদের অত্যাচার করছে সরকার। ক্ষণে ক্ষণে অ্যামিবার মতো অবয়ব পরিবর্তন ও ভিন্ন ভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্তি তৈরি করা বিএনপির লক্ষ্য।
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির চেয়ারম্যান একেএম রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা-বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য আবদুল আউয়াল শামীম উপস্থিত ছিলেন।