‘স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বাঁচাতে ই-বর্জ্য নিরসনে গুরুত্ব বাড়ানো দরকার’

নিজস্ব প্রতিবেদক :  প্রতিবছর দেশে সৃষ্টি হচ্ছে ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য, যার মধ্যে শুধু স্মার্ট ডিভাইসেই সৃষ্টি হচ্ছে সাড়ে ১০ কেজি টন ই-বর্জ্য। অন্তত দুই লাখ ৯৬ হাজার ৩০২ ইউনিট নষ্ট টেলিভিশন থেকে সৃষ্টি হচ্ছে ১ দশমিক ৭ লাখ টনের মতো ই-বর্জ্য। জাহাজভাঙা শিল্প থেকে আসছে ২৫ লাখ টনের বেশি। শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই এই বর্জ্য বাড়ছে ৩০ শতাংশ হারে বলে জানিয়েছেন বক্তারা।

গত শনিবার বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজএফ) উদ্যোগে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘ই-বর্জ্যরে কার্বন ঝুঁকিতে বাংলাদেশ: কারণ ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন বক্তারা। 

হিসাব বলছে, ২০২৫ সাল নাগাদ কোটি টনের ই-বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে বিলিয়ন ইউনিট স্মার্ট উৎপাদন হবে। কম্পিউটার পিসিবিভিত্তিক ধাতু রূপান্তর ব্যবসায় সম্প্রসারিত হবে, যা ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ মানবিক সংকট। সংকট নিয়ন্ত্রণে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার সঙ্গে দেশ থেকে দেশে প্রবেশ করা রিফার্বিশ ইলেকট্রনিকস পণ্য আমদানি বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আখতার হোসেন। উপস্থাপনায় তিনি বলেন, ই-বর্জ্যরে কোনো গাইডলাইন নেই, অভিভাবকহীন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমালা তৈরি করা দরকার। আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে আমরা এই বিআইজেএফের সবাইকে নিয়ে দেশজুড়ে আন্তর্জাতিক মানের ই-বর্জ্য সচেতনতা দিবস পালন করব। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় হ্যাকাথন করতে চাই।

গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সময়ের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক। এজন্য সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ থাকা দরকার। এটা বাস্তবায়নে বিআইজেএফ প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।

সার্ক সিসিআই (বাংলাদেশ) নির্বাহী কমিটির সদস্য শাফকাত হায়দারের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী  মাহফুজুল আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া শাখার পরিচালক খন্দকার আলী মঈন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের উপসচিব সাঈদ আলী, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) উপ-পরিচালক (ঢাকা বিভাগ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিইআরএম পরিচালক রওশন মমতাজ এবং  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোবোটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ই-বর্জ্য নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি শহীদ উল মুনির, গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ, স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, জেআর রিসাইক্লিং/সলিউশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ হোসেন জুয়েল, এইচপি বাংলাদেশ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার (ভোক্তা পিএস) কৌশিক জানা, আসুসের কান্ট্রি প্রোডাক্ট ম্যানেজার আসাদুর রহমান সাকি, লেনোভো ভারতের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক ব্যবসা) সুমন রায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজমুস সালেহীন, ইউসিসি’র হেড অব সেলস শাহীন মোল্লা, স্মার্ট টেকনোলজিসের ডিরেক্টর (সেলস) মুহাহিদ আল বেরুনী সুজন প্রমুখ।