স্মরণীয়-বরণীয় : শওকত ওসমান

কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক শওকত ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান; ‘শওকত ওসমান’ তার সাহিত্যিক নাম।

শওকত ওসমান কলকাতার আলীয়া মাদরাসা থেকে প্রবেশিকা, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে আইএ ও বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করেন।

এমএ পাস করার পর তিনি গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অব কমার্সে যোগ দেন এবং ১৯৫৯ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। উপন্যাস ও গল্প রচয়িতা হিসেবেই শওকত ওসমানের মুখ্য পরিচয়; তবে প্রবন্ধ, নাটক, রম্যরচনা, স্মৃতিকথা ও শিশুতোষ গ্রন্থও তিনি রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো-উপন্যাস জননী (১৯৫৮), ক্রীতদাসের হাসি (১৯৬২), সমাগম (১৯৬৭), চৌরসন্ধি (১৯৬৮), রাজা উপাখ্যান, জাহান্নাম হইতে বিদায়, দুই সৈনিক, নেকড়ে অরণ্য, পতঙ্গ পিঞ্জর, আর্তনাদ, রাজপুরুষ (১৯৯২); গল্পগ্রন্থ জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প, মনিব ও তাহার কুকুর, ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী; প্রবন্ধগ্রন্থ ভাব ভাষা ভাবনা, সংস্কৃতির চড়াই-উতরাই, মুসলিম মানসের রূপান্তর; রম্যরচনা ‘নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত’ প্রভৃতি।

শওকত ওসমানের স্মৃতিকথামূলক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলোÑস্বজন সংগ্রাম, কালরাত্রি খণ্ডচিত্র, অনেক কথন, গুড বাই জাস্টিস মাসুদ, মুজিবনগর, অস্তিত্বের সঙ্গে সংলাপ, সোদরের খোঁজে স্বদেশের সন্ধানে, মৌলবাদের আগুন নিয়ে খেলা, আর এক ধারাভাষ্য প্রভৃতি। স্বজন সংগ্রামে তার ব্যক্তিগত জীবন-সংগ্রামের অনেক কথা বর্ণিত হয়েছে।

সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬২), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), পাকিস্তান সরকারের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক (১৯৮৩), মাহবুবউল্লাহ ফাউন্ডেশন পুরস্কার (১৯৮৩), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১) ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (১৯৯৭) ভূষিত হন। ১৯৯৮ সালের ১৪ মে ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

[সংগৃহীত]