ঢাকার নবাব, মুসলিম জাতীয়তাবাদী নেতা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক খাজা সলিমুল্লাহ। তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। যদিও তিনি জীবদ্দশায় এই বিশ্ববিদ্যালয় দেখে যেতে পারেননি। খাজা সলিমুল্লাহ ঢাকার আহসান মঞ্জিলে ১৮৭১ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি উর্দু, আরবি, ফারসি ও ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করেন। বাল্যকাল থেকেই আভিজাত্যের প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে তিনি সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মিশতে শুরু করেন। খাজা সলিমুল্লাহ ১৮৯৩ সালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরিতে যোগ দেন। ১৮৯৫ সালে চাকরি ত্যাগ করে সলিমুল্লাহ ময়মনসিংহে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯০১ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি ঢাকা নওয়াব এস্টেটের কর্তৃত্ব লাভ করেন। ১৯০৩-০৪ সালে ইংরেজ সরকারের বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনার ওপর মতামত দিতে গিয়ে নবাব সলিমুল্লাহ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯০৩ সালে লর্ড কার্জন এক সফরে ঢাকা আসেন। এ সফরে স্যার সলিমুল্লাহ লর্ড কার্জনকে পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি ১৯০৪ সালের ১১ জানুয়ারি পূর্ববঙ্গের হিন্দু-মুসলিম নেতাদের নিয়ে আহসান মঞ্জিলে এক সভা করে সরকারের বঙ্গবিভাগ পরিকল্পনার কিছু বিষয় বিরোধিতা করেন। তিনি পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের সুবিধার্থে ঢাকায় রাজধানী করে বৃহত্তর প্রদেশ গঠনের এক বিকল্প প্রস্তাবও দেন। ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হলে ঢাকা নতুন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী হয়। ১৯০৭ সালে কলকাতায় উভয় বঙ্গের মুসলিম নেতাদের এক সভায় ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ঢাকার নবাবের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও নারায়ণগঞ্জের নবাব সলিমুল্লাহ রোডের নামকরণ করা হয়েছে। ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী সালমা সুলতানা