Print Date & Time : 6 August 2025 Wednesday 12:56 am

স্মরণীয়-বরণীয়

তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী নোবেলজয়ী প্রফেসর আবদুস সালাম। তিনি প্রথম নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত মুসলিম বিজ্ঞানী। প্রফেসর সালামের উল্লেখযোগ্য অবদান ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স ও দুর্বল নিউক্লিয়ার ফোর্সের একত্রীকরণ তত্ত্ব। এছাড়া তিনি ওমেগামাইনাস নামে একটি মৌলকণা আবিষ্কার করেন। প্রায় ৫০ বছরের নিরলস গবেষণার মাধ্যমে কণা পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন অংশে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। আবদুস সালাম ১৯২৬ সালের এই দিনে ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের ঝাং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালে ছয় বছর বয়সে আবদুস সালাম স্থানীয় ঝাং স্কুলে ক্লাস থ্রিতে ভর্তি হন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি  মেট্রিক, ১৯৪২ সালে এফএ, ১৯৪৪ সালে বিএ ও ১৯৪৬ সালে এমএ পরীক্ষায় রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে ক্যামব্রিজে পড়াকালে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে প্রফেসর আবদুস সালামের সত্যিকারের বিচরণ শুরু করেন। সেখানে তিনি গণিতে ও পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন। ১৯৫০ সালে পদার্থবিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্মিথ পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ১৯৫১ সালে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বিখ্যাত ফিজিক্স জার্নাল ফিজিক্যাল রিভিউতে তার দুটো গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। ১৯৫৫ সালে জাতিসংঘের ‘শান্তির জন্য পরমাণু’ সম্মেলনে তিনি বৈজ্ঞানিক সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৫৭ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হপকিন্স পুরস্কার লাভ করেন। প্রফেসর আবদুস সালামের অন্যতম অবদান মৌলিক কণাগুলোর শ্রেণিকরণে গণিতের গ্রুপ থিওরির ব্যবহার। ১৯৬১ সালে তার নেতৃত্বে পাকিস্তানের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও ১৯৬৫ সালে পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হয়। ১৯৭২ সালে তিনি পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি প্রকল্পের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির পর স্বাভাবিকভাবেই অসংখ্য পুরস্কার ও পদকের পাশাপাশি বিশ্বের ৩৫টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডিএসসি ডিগ্রি প্রদান করে। ১৯৯৬ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা