Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 12:58 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী আসফাকউল্লা খান। রামপ্রসাদ বিসমিলের সঙ্গে শহীদ হন তিনি। ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাদের উভয়কে একই দিনে আলাদা জেলে ফাঁসি দেয়া হয়। আসফাকউল্লা ১৯০০ সালের ২২ অক্টোবর ভারতের উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উর্দুতে ভালো কবিতা লিখতেন। অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে ২০২১ সালে তিনি বন্ধু রামপ্রসাদ বিসমিলের সঙ্গে কংগ্রেসে যোগদান করেন। তারা ভারতে বসবাসরত ব্রিটিশদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তাদের কার্যক্রম চালানো ও অস্ত্রশস্ত্র কেনার জন্য  সরণপুর লক্ষৌ চলাচলকারী ৮-ডাউন প্যাসেঞ্চার ট্রেন বহনকারী সরকারি কোষাগার লুট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৯ আগস্ট ১৯২৫ আসফাকউল্লা খান এবং অন্য আটজন বিসমিলের নেতৃত্বে ট্রেন লুট করেন। এর এক মাসের মধ্যে সিআইডি সূত্র বের করে প্রায় সব বিপ্লবীদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আসফাক ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি, যার খোঁজ পুলিশ পায় না। আসফাক লুকিয়ে বারানসী যাত্রা করেন, সেখান থেকে বিহার গমন করেন এবং সেখানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে দশ মাস কাজ করেন। পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন দেশ ত্যাগ করার। কিন্তু কীভাবে দেশ ত্যাগ করবেন তা জানতে তিনি দিল্লি যান, সেখানে তিনি তার একজন পাঠান বন্ধুর সহায়তা নেন এবং সেই বন্ধুটিই বিশ্বাসঘাতকতা করে আসফাককে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। আসফাকউল্লা খানকে ফৈজাবাদ জেলে পাঠানো হয়। এ মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ব্রিটিশ সরকার। ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৭ তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার আগে আসফাকউল্লা খানকে দুই স্তর উপরে বেদিতে নেয়া হয়। যখন তাকে শিকল থেকে মুক্ত করা হয়, তিনি ফাঁসির দড়ির কাছে যান এবং সেটিকে চুমু খেয়ে বলেন, ‘আমার হাত কোনো মানুষ হত্যা করেনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আল্লাহ আমাকে ন্যায়বিচার দেবেন।’

কাজী সালমা সুলতানা