Print Date & Time : 7 August 2025 Thursday 12:42 pm

স্মরণীয়-বরণীয়

দেশবরেণ্য রন্ধনশিল্পী ও পুষ্টিবিদ অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর। রান্নাকে শিল্পের মর্যাদায় উন্নীত করতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। ‘রান্না কেবল নেহাত প্রয়োজন নয়, এটি একটি শিল্প’এই ধারণাটি তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন। টেলিভিশনে রান্না ও পুষ্টিবিষয়ক দীর্ঘদিন ধরে তার অংশগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানে প্রচারিত ‘সিদ্দিকা কবীর’স রেসিপি’ অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। সিদ্দিকা কবীর ১৯৩১ সালের ৭ মে পুরান ঢাকার মুকিমবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইডেন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি  অর্জনের পর  তিনি ভিকারুননিসা স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ইডেন গার্লস কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৩ সালে তিনি খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধপূর্ব তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরিতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করেন। এরপর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, আজিমপুর, ঢাকা-এর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানীন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরে বাইরে’ নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন। সিদ্দিকা কবীর তার ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রান্না খাদ্য পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্না (সম্পাদনা) উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তিনি ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লেখেন। সিদ্দিকা কবীর ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লেখেন, যা পরবর্তী সময়ে ‘খাবার দাবারের কড়চা’ নামে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রীত বইয়ের মধ্যে তার ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটি অন্যতম। ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা