Print Date & Time : 7 September 2025 Sunday 12:25 am

স্মরণীয়-বরণীয়

বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু, পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আজ ১০৮তম জন্মবার্ষিকী। তিনি ২৩ বছর  পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ভারতের সবচেয়ে বেশি মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী। জ্যোতি বসু ১৯১৪ সালের ৮ জুলাই কলকাতায় জš§গ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ছিল জ্যোতিরিন্দ্র বসু; ডাক নাম গনা। বসু পরিবারের আদিনিবাস ছিল বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁয়ের বারদী গ্রামে। তার শৈশবের অনেকটা সময় কেটেছে এই গ্রামে। জ্যোতি বসু প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯৩৫ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি লন্ডনের মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে ১৯৪০ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন।  ইংল্যান্ডে থাকাকালে কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হন জ্যোতি বসু। ১৯৪০ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। ১৯৪৬ সালে তিনি অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। পাশাপাশি পলিটব্যুরো সদস্যসহ ১৯৪৬ সালে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৬৭ এবং ১৯৬৯ সালে জ্যোতি বসু ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন জ্যোতি বসু। তিনি সরাসরি ভারত সরকারকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়ে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি ও তার দল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। তিনি গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকেও সুপারিশ করেন। জ্যোতি বসু কমিউনিস্ট দলের সদস্য হিসেবে ১৯৭৭ সালের ২১ জুন থেকে ২০০০ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছর সাফল্যের সঙ্গে একটানা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে সুনাম অর্জন করেন। তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৬৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পলিটব্যুরোর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে তাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। ২০০০ সালে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে দলের অন্যতম সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বাঙালির অকৃত্রিম বন্ধু এই মহান রাজনীতিবিদ ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ জানায়।

কাজী সালমা সুলতানা