Print Date & Time : 10 July 2025 Thursday 12:49 am

স্মরণীয়-বরণীয়

গণতন্ত্রের মানসপুত্র-খ্যাত প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ১২৯তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৮৯২ সালের আজকের এই দিনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি (সম্মান) ও বিসিএল ডিগ্রি লাভ করেন। পরে  লন্ডনের গ্রেস ইন থেকে ব্যারিস্টার অ্যাট ল সম্পন্ন করেন এবং ব্রিটেনে আইনজীবী হিসেবে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯২০ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং পরের বছর বাংলা প্রাদেশিক সভায় সদস্য নির্বাচিত হন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন এক প্রতিভাবান রাজনৈতিক সংগঠক। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তিনি শ্রমিকনেতা হিসেবে কলকাতায় নাবিক, রেলকর্মচারী, পাটকল ও সুতাকল কর্মচারী, রিকশাচালক, গাড়িচালকসহ খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের রাজনীতি করতেন। এ সময়ে তিনি প্রায় ৩৬টি ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে তোলেন। রাজনৈতিক জীবনে সোহরাওয়ার্দী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকেছেন। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র, ১৯৩৭ সালে ফজলুল হক কোয়ালিশন মন্ত্রিসভার শ্রম ও বাণিজ্যমন্ত্রী, ১৯৪৩-১৯৪৫ সালে খাজা নাজিমউদ্দীন মন্ত্রিসভায় বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রী, ১৯৪৬-১৯৪৭ সালে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পাকিস্তান আমলে ১৯৫৪-১৯৫৫ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রী এবং ১৯৫৬-১৯৫৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯২০ সালে কলকাতা খেলাফত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। তিনি ১৯২৬ সালে ইন্ডিপেনডেন্ট মুসলিম পার্টি এবং ১৯৩৭ সালে ইউনাইটেড মুসলিম পার্টি গঠন করে নিজে দলের সম্পাদক হন। এ সময় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিলে সোহরাওয়ার্দী নিজ দলসহ মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে বাংলায় মুসলিম লীগের বিজয়ে তিনিই মূলশক্তি ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানে না গিয়ে কলকাতায় গান্ধীর সঙ্গে দাঙ্গাবিরোধী শান্তি মিশনে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে সমতার নীতি এবং পশ্চিম পাকিস্তান এক ইউনিট গঠনের একান্ত সমর্থক ছিলেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় সোহরাওয়ার্দী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালে স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি দেশের বাইরে যান। সে বছরই ৫ ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা