Print Date & Time : 15 September 2025 Monday 4:28 am

স্মরণীয়-বরণীয়

শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের রাজনীতির কিংবদন্তি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা তিনি। এক প্রতিকূল পরিবেশে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁর আবির্ভাব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে তাঁকে এ দায়িত্ব নিতে হয়। ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা বিদেশ থাকায় ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা পান। দলের সভাপতি নির্বাচিত হন নির্বাসিত জীবনযাপনকালে।

১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে প্রথমেই উদ্যোগ নেন বহুধাবিভক্ত আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের। কিন্তু এ পথ ছিল বড়ই বন্ধুর, বড়ই বিপদসংকুল। বারবার হত্যাকারীরা তাঁর ওপর আঘাত হেনেছে। কিন্তু তাঁর দৃঢ় মনোবল, অদম্য সাহস আর দেশপ্রেম এগিয়ে নিয়ে গেছেন লক্ষ্যপথে। এরশাদের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের ভেতর দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি থেকে জনগণের নেত্রীতে পরিণত হন। জামায়াত ইসলামের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শেখ হাসিনা সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে শেখ হাসিনা দেশের জন্য অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন। গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা, বয়স্ক ভাতা চালুসহ নানা পদক্ষেপের ভেতর দিয়ে শেখ হাসিনা জনগণের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবির্ভূত হন।

শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের এই দিনে টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং মা বেগম ফজিলাতুন্নেছার প্রথম সন্তান তিনি। তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বাল্যশিক্ষা নেন। তিনি ১৯৫৬ সালে টিকাটুলীর নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে গভর্নমেন্ট ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুননেসা সরকারি মহিলা কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) ছাত্র সংসদের নির্বাচিত সহসভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মেয়াদে তিনি দেশকে নিয়ে গেছেন উচ্চমাত্রায়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের দৃষ্টান্ত। ১৯৬৮ সালে খ্যাতনামা পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ হয়। রাজনীতির বাইরে লেখক হিসেবে শেখ হাসিনা ৩০টি গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন।

কাজী সালমা সুলতানা