পদ্মা সেতু আজ স্বপ্ন নয়, চ্যালেঞ্জের বাস্তবায়ন

‘স্রোতস্বিনী নদীর বুকে দাঁড়িয়ে গেছে বাংলার আত্মমর্যাদা’

রেজাউল করিম চৌধুরী: উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে অদম্য বঙ্গবন্ধুকন্যা, দুরন্ত বাংলাদেশ। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নানা সমস্যা ও ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি থাকা সত্ত্বেও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঠিক রেখে একের পর এক মেগা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। সীমাহীন ষড়যন্ত্রকে পায়ে মাড়িয়ে গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এ দিনটি বহুল প্রতীক্ষিত। পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন একদিকে যেমন একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন, অন্যদিকে আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন। প্রায় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলনের বহুমুখী এ সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে। খরস্রোতা পদ্মা নদীর উত্তর পাড়ের জেলা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্ট, দক্ষিণ পাড়ের শরীয়তপুর এবং মাদারীপুরের জঞ্জিরা পয়েন্টকে অন্তর্ভুক্ত করা সেতু প্রকল্পটিতে ছিল বহুমুখী চ্যালেঞ্জ। ভৌত কাজকে (১) মূল সেতু, (২) নদী শাসন, (৩) জাজিরা সংযোগকারী সড়ক, (৪) টোল প্লাজা ইত্যাদি (৫) মাওয়া সংযোগকারী সড়ক, টোল প্লাজা ইত্যাদি এবং মাওয়া ও জাজিরা সার্ভিস এলাকা এই পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে আনা হয়। মাওয়া এলাকায় ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং জাজিরা এলাকায় ১২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার প্রকল্প এলাকা নিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার নদীশাসন করতে হয়েছে চ্যালেঞ্জিং এ সেতু নির্মাণে। মূল সেতু নির্মাণে বড় রকমের চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে আসে পাইলিং সমস্যা। পাইলিং কাজ শুরুর পরে দেখা যায়, পদ্মা নদীর তলদেশের মাটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ পদ্মার তলদেশের মাটি পাইলিংয়ের জন্য স্বাভাবিক নয়। ওপর থেকে পাইপের ছিদ্র দিয়ে রাসায়নিক নদীর তলদেশে পাঠিয়ে স্ক্রিন গ্রাউটিং পদ্ধতিতে মাটির শক্তিমত্তা বাড়ানো হয়, তারপর ওই মাটিতে পিলার গেঁথে দেয়া হয়। ভূ-প্রকৃতিগত এসব সমস্যা ছাড়াও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে ও পরে নানামুখী ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে সরকারকে।

১৯৯৮ সাল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখনও ছিলেন সরকারপ্রধান। তখনই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন তিনি। ১৯৯৮ থেকে ২০০০Ñএই সময়ে সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়ে শেষ হয় ২০০১ সালে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজে সহায়তা করে জাপান। সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সরকার পরিবর্তন হলে আর আলোর মুখ দেখেনি স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্প। দেশরতœ শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের ১৯ জুন সেতুর নকশা প্রণয়নের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে। এরপর ২৯ জুন পরামর্শকের সঙ্গে চুক্তি হয়। পদ্মা সেতুর কাজ ২০১৩ সালের মধ্যে শেষ করার সময় নির্ধারণও করা হয় সে সময়। ২০১০ সালে প্রিকোয়ালিফিকেশন দরপত্র আহ্বান করা হয়। পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে আগ্রহ দেখায় বিশ্বব্যাংক। ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে সরকার। জাইকা, আইডিবি ও এডিবিও পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের আগ্রহ দেখালে একই বছরের ১৮ মে জাইকার সঙ্গে ৪০ কোটি ডলার, ২৪ মে আইডিবির সঙ্গে ১৪ কোটি ডলার এবং ৬ জুন এডিবির সঙ্গে ৬২ কোটি ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয় যায় বিপত্তি। সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগ এনে অর্থছাড় স্থগিত করে বিশ্বব্যাংক। তখনও কোনো কোনো সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবি, আইডিবি কেউ কোনো অর্থ ছাড়ও দেয়নি তখনও অথচ আনা হলো সম্ভাব্য দুর্নীতির অভিযোগ। ঋণচুক্তির পাঁচ মাসের মাথায় এমন অভিযোগ কেবল ভিত্তিহীনই ছিল তা নয়, এটা ছিল নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে হীন এক চক্রান্ত। বিশ্বব্যাংকের পথ অনুসরণ করে অন্য দাতা সংস্থাগুলোও। ঋণচুক্তি স্থগিতের সময় ঋণ পুনর্বিবেচনার জন্য দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ চারটি শর্ত জুড়ে দেয় বিশ্বব্যাংক। সরকারের তরফ থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে নানা দেন-দরবার চলতে থাকে। চুক্তি বাতিল এড়াতে এ সময় যোগাযোগ সচিবকে সরিয়ে দেয়া, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তৎকালীন সেতু ও যোগাযোগমন্ত্রী পদত্যাগসহ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপও নেয় সরকার। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের তালবাহানা চলতেই থাকে এবং ২০১২ সালের ২৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয় তারা। ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংকের দেয়া বক্তব্য বাংলাদেশকে অপমান করেছে বলে উল্লেখ করেÑতৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে বলেছেন, ‘আমি জোর গলায় বলতে পারি, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোথাও কোনো অপচয় বা দুর্নীতি হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় সংসদে রাখা বক্তব্যে পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেন এবং প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করা হবে বলে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশি ও প্রবাসীদের পদ্মা সেতু নির্মাণে সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকে এগিয়েও আসেন। শুরু হয় অর্থ সংগ্রহ। পরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পদ্মা সেতুর অর্থ সংগ্রহে প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকে দুটি করে ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সব মন্ত্রী এক মাসের সম্মানী পদ্মা সেতু ফান্ডে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সচিবরাও একটি উৎসব ভাতার সমপরিমাণ অর্থ পদ্মা সেতু ফান্ডে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অর্ধ শতাধিক সচিব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই অর্থ নির্ধারিত ব্যাংকে জমাও দেন। উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংক কর্তৃক আনীত সব অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা না পাওয়ায় কানাডার আদালত এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মনগড়া হিসেবে আখ্যা দেয়।

বিশ্বব্যাংকের তালবাহানায় ক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, ‘এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাদের অবস্থান স্পষ্ট না করলে সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো ঋণ নেবে না এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে। পরে ৩১ জানুয়ারি সরকার পদ্মা সেতুর জন্য অর্থায়নের অনুরোধ প্রত্যাহার করে বিশ্বব্যাংককে চিঠি দেয়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবল, সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শিতায় সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বহুমাত্রিক পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা নিয়ে প্রায় ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটার তথা বাংলাদেশের মোট এলাকার ২৯ শতাংশ অঞ্চল দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে যুক্ত হচ্ছে। রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সম্প্রসারণের ব্যবস্থা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন দুয়ার খুলে দিচ্ছে। ফলে ওই অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি বাড়বে ২ শতাংশেরও অধিক এবং বাংলাদেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ হারে পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। ঢাকার সঙ্গে ২১টি জেলার দূরত্ব ও সময় কমে আসবে অনেকটাই। দুঃখজনক হলো, যে সুফল দেশের মানুষ আরও আট থেকে নয় বছর আগেই পাওয়ার কথা ছিল, দেশি-বিদেশি চক্রান্তে তা পেতে এত সময় প্রতীক্ষায় থাকতে হলো।

অনৈতিকভাবে গ্রামীণব্যাংকের এমডি পদে থাকতে না পেরে ড. ইউনুছ সরকারকে চাপে ফেলতে পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফোনও করিয়েছিলেন। আর বিএনপি, জামায়াত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছে। তারা নানা সময়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য ছাড়াও বিভিন্ন প্রকার গুজবের আশ্রয় নিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজকে বন্ধ কিংবা বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। পদ্মা সেতু আজ বাস্তবতা, তবুও থেমে নেই বিএনপি-জামায়াতের গুজব, অপপ্রচার। জনগণের সমর্থন ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আত্মবিশ্বাস, সাহস ও সততা দিয়ে এত এত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন। অনিশ্চয়তার ঘন তমশা ভেদ করে আজ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের অর্থনীতিতে নবারুণ রেখা সপ্রতিভাত হয়ে ওঠেছে। শুধু তাই নয়, ‘বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস, আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু সারাবিশ্বের স্থাপত্য শিল্পকে দিকনির্দেশনা দেবে নানা কারণে। কারণ, দ্বিতল পদ্মা সেতু তৈরিতে অনেক বাধা-বিপত্তি ও চ্যালেঞ্জ পেরোনোর পরও ৫টি কারণে পৃথিবীর অন্য সেতুর তুলনায় পদ্মা সেতু অসাধারণ স্থাপনা। এ সেতু নির্মাণে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেন্ডুলাম বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে, যার সক্ষমতা ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার সক্ষমতা রয়েছে পদ্মা সেতুতে। বিশ্বের ২য় সর্বোচ্চ খরস্রোতা নদী পদ্মার মাটির ১২০-১২৭ মিটার গভীরে গিয়ে বসানো হয়েছে সেতুর পাইল। এর আগে পৃথিবীর অন্য কোনো সেতুর জন্য এত গভীরে গিয়ে পাইল বসাতে হয়নি। নদীর পাইলগুলো ভেতরে ফাঁকা, ইস্পাতের তৈরি। প্রতিটি পাইলের ব্যাসার্ধ তিন মিটার। পুরুত্ব ৬২ মিলিমিটার। একেকটি পিলারের নিচে ছয় থেকে সাতটি পাইল বসানো হয়েছে। এই পাইলগুলো নদীর তলদেশের মাটি থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৪১২ ফুট গভীরে বসানো হয়েছে।

সেতু নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে চীনের তৈরি ‘তিয়ান ই’ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজ।

পদ্মা সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল উভয়ই ব্যবহার করার কারণেও এটি অনন্য। বিশ্বে আর কোনো সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়নি। পদ্মা নদীর গতিপ্রকৃতি ও বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় এখানে যেকোনো সেতু নির্মাণ করা ছিল অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তাই এ প্রকল্পে প্রায় ১৪ কিলোমিটার এলাকা নদী-শাসন করতে হয়েছে।

নদী শাসনের এ বিস্তীর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠেছে ব্যাপক শিল্পায়ন ও পর্যটন সম্ভাবনা। আর এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে, কারণ আমাদের আছেন একজন শেখ হাসিনা। তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমাদের অস্তিত্বের শেকড়। তার দৃঢ়তা, সততা, নিষ্ঠতা, জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ আমাদের দেশকে আত্মমর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। জাতি হিসেবে আমাদের করেছে গর্বিত, মহীয়ান। তিনি সব সময় বলেন, সততা ও জনগণের সমর্থনই আমার শক্তি। এ শক্তি আমার পাশে থাকলে কোনো অপশক্তিই আমাদের এগিয়ে চলাকে দমাতে পারবে না। ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র।

মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন