হজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হোক

চলতি বছর বিশ্বের কোন দেশ থেকে কতজন মুসলিম পবিত্র হজব্রত পালনের সুযোগ পাবেন, সে তালিকা প্রকাশ করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কভিড মহামারির কারণে দুই বছর ধরে সৌদি আরব বিদেশিদের হজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ায় চলতি বছর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে সীমিতসংখ্যক মানুষকে হজের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এ বছর ১০ লাখ হজযাত্রী সৌদিতে প্রবেশের অনুমতি পাবেন বলে জানানো হয়। প্রকাশিত হজ কোটা অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশের ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজ করতে পারবেন। এ বছর হজযাত্রীদের কয়েকটি শর্ত দিয়েছে সৌদি আরব। বিদেশি হজযাত্রীদের বয়স ৬৫ বছরের নিচে এবং সৌদি আরবের টিকাদান কর্মসূচিতে যেসব টিকা ব্যবহারের অনুমতি আছে, সেগুলোর কোনো একটির দুই ডোজ নেয়ার সনদ থাকতে হবে। অনুমোদিত যাত্রীদের অবশ্যই সৌদি আরবের বিমানে ওঠার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে কভিডের পিসিআর টেস্ট করাতে হবে এবং সেই টেস্টে নেগেটিভ সনদ পেতে হবে।

একটি নির্দিষ্ট সময় হজযাত্রীদের সৌদি আরব যেতে হবে। তাই হজের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় বছরই নানাবিধ কারণে হজযাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন। কখনও ফ্লাইট সংকটে কখনও এজেন্সিগুলোর অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। তাই হজ এজেন্সিগুলোকে যথাসময়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাড়িভাড়া ও ভিসার আগেই এ বছর টিকিট কেনার নির্দেশনা থাকলেও এখনও নির্ধারিত টিকিটগুলো কেনেনি অনেক এজেন্সি। হজ এজেন্সিগুলোকে আগেভাগেই সৌদি আরবে বাসাভাড়া নিশ্চিত করতে হবে।  নির্দিষ্ট কার্যক্রম সময়মতো সম্পাদন না করলে শেষ সময়ে এসে জট পাকিয়ে যেতে পারে। এজেন্সিগুলো ঠিক সময়ে টিকিট সংগ্রহ না করলে ফ্লাইটসূচিতেও বিপর্যয় ঘটে। যেমন সাধারণত হজ শুরুর ৫০ দিন আগে উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। তা সময়মতো সংগ্রহ না করলে অনেক টিকিট অবিক্রীত থেকে যায়। নির্দিষ্ট ফ্লাইটের বাইরে সৌদি কর্তৃপক্ষ আর কোনো সøট না দিলে সব হজযাত্রী পরিবহনে বিপত্তির আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এর আগেও হজ এজেন্সিগুলোকে তাগিদ দেয়া হলেও টিকিট নিশ্চিত করেনি তারা। হজযাত্রার মতো ধর্মীয়ভাবে স্পর্শকাতর বিষয়ে যাতে কোনো রূপ অনিয়ম না হয়, তাই সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে হবে। হজ এজেন্সি, ধর্ম মন্ত্রণালয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়সহ সব অংশীজন দায়িত্বশীল হলে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা সম্ভব। ফ্লাইট, টিকিটসহ সব বিষয়ে সমন্বয় রক্ষা করতে হবে। এ বছর আমাদের দেশ থেকে হজ পালন করতে পারবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন। এর আগে প্রতিবছর লক্ষাধিক হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে হজপালন করেছেন। সৌদি আরব সরকারের নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে সব হজযাত্রীকে। এ লক্ষ্যে হজযাত্রীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। হজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে যথাসময়ে সব হজযাত্রীকে নির্বিঘেœ সৌদি আরবে পাঠানো সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।