Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 12:19 am

হঠাৎ এলপিজির সংকট, ‘রাতারাতি’ বাড়ছে দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাসের শেষে হঠাৎ তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এলপিজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করেছে; অনেক স্থানে সরবরাহে টানও পড়েছে। এক সপ্তাহে খুচরায় ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম অন্তত ২০০ টাকার বেশি নিচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা। ঢাকার অনেক খুচরা দোকানে তা পাওয়াও যাচ্ছে না। দেশের অন্যান্য এলাকায়ও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো সিলিন্ডার পাঠাচ্ছে না বলে খবর হয়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানিই সরবরাহ কমিয়েছে বলে জানাচ্ছেন এজেন্ট ও খুচরা বিক্রেতারা।

গতকাল সোমবার ঢাকার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অনেক খুচরা দোকানে এলপিজির মজুত নেই। যাদের আছে তারাও ১২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডারের দাম চাচ্ছেন ১৬০০ টাকা। অথচ জানুয়ারির জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ঘোষিত মূল্য অনুযায়ী, ১২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডারের খুচরা মূল্য হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ১ হাজার ২৩২ টাকা।

এলপি গ্যাস অপারেটরগুলোর সংগঠন এলপিজি অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লোয়াব) মনে করছে, শিল্প-কারখানাসহ বহুমুখী কাজে এলপি গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহে টান পড়েছে। খুচরায় সরবরাহে ঘাটতির ক্ষেত্রে একে কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ঘাটতির সুযোগ নিয়ে বাড়ছে দাম।

১২ কেজি ওজনের একটি সিলিন্ডার দেখিয়ে রাজধানীর মুগদা এলাকার দোকানদার মেশকাত বলেন, ‘এখন যেটা জ্বলছে এটা গত শনিবার রাতে ১ হাজার ৪৫০ টাকা করে কিনেছিলাম। সোমবার রাতে একটা দিয়ে গেছে ১ হাজার ৫৫০ টাকা দাম। আজ (মঙ্গলবার) থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা করে কিনতে হবে বলে সরবরাহকারীরা জানিয়ে গেলেন।’

আগারগাঁওয়ে গ্রিন হার্ডওয়্যার নামে একটি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি যে ডিলারের কাছ থেকে গ্যাস কিনে এনে বিক্রি করেন গত দুই দিন ধরে তারা গ্যাস দিচ্ছেন না। ফলে দোকানের সামনে কিছু খালি সিলিন্ডার সাজানো রয়েছে। গ্যাস রয়েছে কি না জানতে চাইলে গ্রিন হার্ডওয়ার থেকে বলা হয়, ‘আজকে গ্যাস নেই। রাতে এলে বিক্রি করা যাবে। তবে দাম সম্ভবত ১২ কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা ধরতে হবে।’

আরেকজন খুচরা বিক্রিতা সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি এখন ১২ কেজি ওজনের সিলিন্ডার ১ হাজার ৬০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। রাতে গ্যাসের ট্রাক আসবে কি না নিশ্চিত নন। যদি তাই হয় তবে আগামীকাল আর গ্যাস বিক্রির উপায় থাকবে না।

লোয়াবের সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, বাজারে চাহিদা বেশি আর সরবরাহ কম হলে এ ধরনের বিষয় হতে পারে। গত কয়েক মাসে যেভাবে আমদানি হচ্ছিল চলতি মাসে সেভাবেই হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু গ্যাস শিল্পকারখানায় এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে গেছে। ইন্ডাস্ট্রি খাতে গ্যাস যাওয়ায় সাধারণ ভোক্তারা একটু কম পাচ্ছেন।

লোয়াবের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে মাসে এক লাখ ২০ হাজার টন এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে।

সরকার নির্ধারিত মূল্য বাজার ও বাস্তবতা পরিপন্থি দাবি করে আজম জে. চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অদক্ষ হওয়ার কারণে এলপি গ্যাসের দাম সঠিকভাবে নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। তারা কেবল সৌদি সিপি বিবেচনায় নিয়ে দাম ঠিক করে। অথচ এখানে অনেক প্রিমিয়ামের বিষয় রয়েছে। চলতি সপ্তাহে ফেব্রুয়ারির জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করবে বিইআরসি।