Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 5:17 am

হয়রানি বন্ধের দাবি আমদানিকারকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমদানিকৃত পণ্যের দ্রুত ছাড় নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্টদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য শিল্পপণ্য ও কাঁচামাল আমদানিকারকরা। গতকাল সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত স্থায়ী কমিটির প্রথম সভায় এ দাবি জানান তারা। আমদানিকারকরা অভিযোগ করেন, পণ্য ছাড় করার ক্ষেত্রে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্টদের নানা হয়রানি করা হয়। এতে একদিকে পণ্য ছাড় করতে বাড়তি সময় লাগে, অন্যদিকে খরচও বাড়ে, যা দেশের ব্যবসা ও উৎপাদনের ব্যয়কেও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের টেস্টিং ল্যাবে সুবিধার অপ্রতুলতার বিষয়ে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, ল্যাবে মাত্র একজন রাসায়নিক পরীক্ষক থাকায় পরীক্ষা কার্যক্রমে দেরি হয়। তাছাড়া ল্যাবে সব ধরনের রাসায়নিক পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাই অনেক সময় সেগুলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এতে পণ্য খালাসের জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। অন্যদিকে এইচএস কোডের অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে ২৫০ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আর শিপিং এজেন্টরা জাহাজ ভাড়ার বাইরে ডকুমেন্ট, সার্ভে, সিকিউরিটি চার্জসহ নানা ধরনের চার্জ আদায় করে থাকে। এর ফলে প্রায় দৈনিক ১০ কোটি টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, অনভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরাই এইচএস কোড-সংক্রান্ত সমস্যার মূল ভুক্তভোগী। এজন্য তিনি আমদানিকারকদের এইচএস কোড সম্পর্কে ভালো করে জেনে নেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরও বলেন, সরকারের কাক্সিক্ষত রাজস্ব আদায়ে সহযোগিতা করা ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব। দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য রাজস্ব আদায়ে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ভারত ও সিঙ্গাপুরের মতো বাংলাদেশের ভ্যাট ব্যবস্থা তুলে দিয়ে জিএসটি (সরকারি সেবা কর) চালুর ব্যাপারে ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেন সিনিয়র সহসভাপতি। জিএসটি চালু হলে রাজস্ব আদায় সহজ হবে এবং দুর্নীতি কমবে বলে মনে করেন তিনি।

কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ ও এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী জানান, ইউরোপ-আমেরিকার সমমানের পণ্য এখন বাংলাদেশে তৈরি হয়। নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ স্বচ্ছতার সংস্কৃতি বজায় রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া আমদানি সহজ করতে বন্দর ডিজিটালাইজেশনের আহ্বান জানান মো. আমিন হেলালী।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও এটুপি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিরসনে নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মুক্ত আলোচনায় তুলার বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের এলসি মার্জিনের বিধি শিথিল, পণ্য আমদানিতে প্রয়োজনীয় লাইসেন্সের সংখ্যা কমানো ও মেয়াদ বাড়ানো এবং ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো চালুর দাবি জানান কমিটির সদস্যরা।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, রাব্বানি জব্বার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, আবু মোতালেব, ইকবাল শাহরিয়ার, মোহম্মেদ বজলুর রহমান, খায়রুল হুদা চপল, কমিটির কো-চেয়ারম্যান কমিটির কো-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী (বাচ্চু), মো. আজিজুর রহমান, মো. নাদিমুল হাকিম, সৈয়দ মো. বখতিয়ার প্রমুখ।