হাইতিতে ভূমিকম্পে নিহত ৩০৪

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ক্যারিবিয়ান সাগর অঞ্চলের দ্বীপ দেশ হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। পুরো ক্যারিবিয়ান অঞ্চলজুড়ে অনুভূত হওয়া এ ভূমিকম্পে অন্তত ৩০৪ জন নিহত ও এক হাজার আটশ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। রিখটার স্কেলের সাত দশমিক দুই মাত্রার এ ভূমিকম্পে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে বহু গির্জা, হোটেল ও ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। খবর: বিবিসি, রয়টার্স।

ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় ভূমিকম্পের সময় ওই অঞ্চলের লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তা তুলে নেয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, হাইতির পাটি ট্র– দ্য নেভাস শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে সাত দশমিক দুই মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। এ স্থানটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে। ভূমিকম্পের পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পরাঘাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস। ভূমিকম্পটি প্রতিবেশী দেশ কিউবা ও জ্যামাইকায়ও অনুভূত হয়েছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এক সাংবাদিক জানান, রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে ভূমিকম্পটি প্রবলভাবে অনুভূত হলেও সেখানে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ১১ বছর আগে হাইতিতে সাত মাত্রার যে ভূমিকম্প হয়েছিল, এবারেরটি তার চেয়ে বড় ও ভূপৃষ্ঠের কম গভীরতায় উৎপত্তি হয়েছে। এ ভূমিকম্পটি ২০১০ সালের ভূমিকম্পের চেয়ে আরও শক্তিশালী হলেও এবার তুলনামূলকভাবে হতাহত কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  আগের ভূমকম্পটিতে দেশটিতে হাজার হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল, বহু ভবন ধসে পড়ে দুই আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে দরিদ্র দেশটির অনেক মানুষ গৃহহীন হয়েছিল। হাইতির দমকল বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০৪ জনে দাঁড়িয়েছে, আর অন্তত এক হাজার ৮০০ মানুষ আহত হয়েছেন এবং আরও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। জরুরি উদ্ধারকর্মীদের দলগুলো ও সাধারণ মানুষ এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বহু লোককে উদ্ধার করেছে। অন্তত ৯৫০টি বাড়ি, সাতটি গির্জা, দুটি হোটেল ও তিনটি স্কুল ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে দমকল বিভাগ। আরও ৭২৩টি বাড়ি, একটি কারাগার, তিনটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও সাতটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বন্দর, বিমানবন্দর ও টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোয় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

ভূমিকম্প উপকেন্দ্রের নিকটবর্তী সবচেয়ে বড় শহর লি কাইয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখানে বহু ভবন ধসে পড়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।