প্রতিনিধি, শেরপুর: বেকার নারীদের ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘হার পাওয়ার প্রকল্প’ এর প্রশিক্ষণার্থী নির্বাচন ও ল্যাপটপ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার এ প্রকল্পের চারটি গ্রুপের মোট ১০৫ জন নারীর মাঝে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার আগেই ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই ল্যাপটপ বিতরণী সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান । শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সদর উপজেলা আইসিটি অফিসার আল আমিন ফারুকের (সহকারী প্রোগ্রামার) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ল্যাপটপ বিতরণী অনুষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও কল সেন্টার এজেন্টের মোট চারটি বিভাগের মোট ১০৫ জন প্রশিক্ষণার্থীর মাঝে এসব ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
এতে প্রকল্প সম্পর্কিত তথ্য উপস্থাপন করেন জেলা আইসিটি অফিসার মো. তারিকুল ইসলাম (প্রোগ্রামার) এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. রাজীব উল আহসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুদ ভূঁইয়া বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও এ সময় অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ, সাংবাদিক হাকিম বাবুল, শফিউল আলম সম্রাট প্রমুখ।
এ সময় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, দেশের ৪৪টি জেলার সদর উপজেলাসহ মোট তিনটি উপজেলা ও পীরগঞ্জ উপজেলাসহ মোট ১৩০টি উপজেলায় তথ্যপ্রযুক্তিকে নারীদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিতে চারটি ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ২৫ হাজার ১২৫ জন নারীকে পাঁচ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তার মধ্যে শেরপুর সদর উপজেলায় ২১০ জন, নালিতাবাড়িতে ১৮৫ জন এবং শ্রীবরদীতে ১২৫ জনসহ মোট ৫৮০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
প্রধান অতিথি প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার আগেই এই ল্যাপটপ বিতরণ কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের যাচাই-বাছাইয়ে আরও সুচারু হওয়া উচিত বলে মনে করেন। এদিকে সদর উপজেলার ১০৫ জনের মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইনের ৪০ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে জিনাত তাসনিম নওশীন নামে বিএডিসিতে কম্পিউটার অপারেটর পদের একজন সরকারি কর্মচারীও এই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণ নিয়ে ল্যাপটপ উত্তোলন করেন। এছাড়া একই গ্রুপে তাসলিমা আক্তার নামে আরও একজন প্রশিক্ষণার্থী যিনি নিজে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একজন প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে সদর উপজেলার আইসিটি অফিসার আল আমিন ফারুক বলেন, এ বিষয়টি দেখা হবে এবং পরবর্তী সময়ে যাতে এ রকম কেউ সুযোগ না পান সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়া হবে।