নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রোগীদের উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে দেশের সব সরকারি ও সেরকারি হাসপাতালে স্নাতক ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তার এ প্রস্তাব গ্রহণ করে হাসপাতালসমূহে উপযুক্ত সংখ্যক ফার্মাসিস্ট নিয়োগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে সংসদে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে গতকাল এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সব উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের স্বাস্থ্য সেবায় ডাক্তার, নার্স এবং ফার্মাসিস্ট এই তিনটি পেশাজীবী শ্রেণি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হাসপাতালে ওষুধের ক্রয়, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং ওষুধের যথার্থ ব্যবহার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান একজন হাসপাতাল ফার্মাসিস্ট এর মূল দায়িত্ব। এ কারণেই হাসপাতালে স্নাতক ফার্মাসিস্ট নিয়োগ একান্ত অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সম্ভবত বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে কোনো সরকারি হাসপাতালে স্নাতক ফার্মাসিস্টদের জন্য কোনো পদও সৃষ্টি করা হয়নি। ফলে কোনো সরকারি হাসপাতালে কোনো স্নাতক ফার্মাসিস্ট কর্মরত নেই। এর ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় পেশাজীবী ফার্মাসিস্ট যে অবদান রাখতে পারতেন তা থেকে চিকিৎসক, নার্স এবং রোগী সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে আধুনিক, গুণগত ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশের হাসাপাতালগুলোয় অবিলম্বে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত স্নাতক ফার্মাসিস্ট নিয়োগের প্রস্তাব করছি।’
এর জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফার্মাসিস্টের ৩৭টি পদ রয়েছে। আর সরকারি হাসপাতালের জন্য ফার্মাসিস্টের ১০টি পদ সৃজন করা হয়েছে। অচীরেই এসব পদ পূরণ করা হবে।
এ সময় সম্পূরক প্রশ্ন উত্থাপনকালে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী উল্লেখ করেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি ২০টি শয্যার বিপরীতে একজন ফার্মাসিস্ট থাকা আবশ্যক। কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র ১০টি পদ সৃজন করা হলেও, এখনও কোনো ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেয়া হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে সরকারি হাসপাতালে ৬৬ হাজার শয্যা রয়েছে। এখন যদি প্রতি ৫০ শয্যার বিপরীতেও এখন ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেয়া হয়, তাতেও তিন হাজার ৩০০ জনের মতো ফার্মাসিস্ট দরকার পড়ে। সেখানে মাত্র ১০ জন অত্যন্ত নগণ্য। এমন পরিস্থিতিতে সব হাসপাতালে ফার্সাসিস্ট নিয়োগে কমিটি গঠনের মতো কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কি নাÑতিনি জানতে চান এবং নিজে একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে এমন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়ে তিনি অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
এর জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং নিজ দপ্তরে আলোচনা করে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কমিটি গঠন বা অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।