আরাফাত চৌধুুরী, জবি প্রতিনিধি : নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রপন্থি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানকে তিন দিনের রিমান্ডে দিয়েছে আদালত।
শুক্রবার (৯ মে) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় পুলিশের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
মিজানুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র।
জানা যায়, গত ৭ মে রাতে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার নারিন্দা এলাকার একটি মেস থেকে তাকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায়। প্রথমদিকে পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য না পেলেও পরে জানা যায়, তিনি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এই মামলার তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ (সিটিটিআইডি)। তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. শাহিনুর রহমান বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির হয়ে মিজানুরের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। তবে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার ও রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, মিজানুর দীর্ঘদিন ধরে হিজবুত তাহরীরের হয়ে প্রচার, সদস্য সংগ্রহ ও রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত। সম্প্রতি ‘Come Out for Save Gaza’ এবং ‘Protest Rally’ নামের কর্মসূচির প্রচারও করেছেন, যা পুলিশের দাবি অনুযায়ী সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল।
রিমান্ড আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ থেকে সংগঠনের বিভিন্ন উগ্র ও রাষ্ট্রবিরোধী কনটেন্ট পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হিজবুত তাহরীরের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছে সিটিটিআইডি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “প্রথমে আমরা তার অবস্থান জানতাম না, পরে জানতে পারি রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে।”
অন্যদিকে মিজানুরের বড় ভাই সাজু রহমান জানান, “সাত তারিখ রাত ১১টার দিকে তাকে নারিন্দার মেস থেকে তুলে নেওয়া হয়। তিন দিন ধরে তার কোনো খোঁজ পাইনি। পরে জানতে পারি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। আমরা তার সুবিচার চাই।”
মামলার বিষয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাশৈনু বলেন, “মামলাটি আমি যোগদানের আগে হয়েছে। এটি ধানমন্ডি থানায় নথিভুক্ত হলেও তদন্ত করছে কাউন্টার টেররিজম বিভাগ। তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবে।”