হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমেছে

প্রতিনিধি, দিনাজপুর: দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি তলানিতে নেমেছে। গত মাসে স্থলবন্দরটি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আসত, এখন আসে তিনটি। আমদানি কম হওয়ায় খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন শতকের ওপরে।

ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানিমূল্য প্রতি মেট্রিক টনে ৩৬০ ডলারের পরিবর্তে ৮০৫ ডলার হওয়া, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ডলার সংকট এবং দেশীয় পাতা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় আমদানি কমছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আমদানি কম হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের দামও এখন আকাশছোঁয়া।

হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩টি ট্রাকে ৮৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। মঙ্গলবারও ৩টি ট্রাকে ৮৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এসেছে। চলতি সপ্তাহে ১৮ নভেম্বর সর্বোচ্চ ৯টি ট্রাকে ২১৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এরপর থেকে আমদানির পরিমাণ কমতে শুরু করে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের কোনো ট্রাক আসেনি।

জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৬ থেকে ৮৭ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। হিলি বাজারসহ হাকিমপুর, বিরামপুর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার খুচরা বাজারে মধ্যম মানের ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, স্থানীয় বাজারগুলোয় পাতা পেঁয়াজের সরবরাহ আশানুরূপ বেড়েছে। প্রতি কেজি পাতা পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাজারে আসা ক্রেতাদের পাতা পেঁয়াজই বেশি কিনতে দেখা গেছে।

পেঁয়াজের আমদানি কমার জন্য ডলার সংকটকে দুষলেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ডলার সংকটের দোহাই দিয়ে ব্যাংকগুলো এলসি (ঋণপত্র) খুলতে চাইছে না। ব্যাংকে যাদের ক্ষমতা আছে, যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন করতে পারেন, তাদের নিয়মিত এলসি হচ্ছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা পারছেন না। শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, খাদ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সরকার ডলার উš§ুক্ত করেছে রেখেছে। কিন্তু ব্যাংক এলসি খুলতে দিচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র খোলা নিয়ে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনতা ব্যাংকে হাকিমপুর শাখার ব্যবস্থাপক মোরশেদ গোলাম রব্বানী মণ্ডল। শিগগির সমস্যার সমাধান

হবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘খাদ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নিয়মিত আমদানিকারকদের জন্য ঋণপত্র খুলতে কোনো সমস্যা নেই। তবে যারা অন্য ব্যাংকে লেনদেন

করেন, তারা আমাদের ব্যাংকে ঋণপত্র খুলতে এলে তাদের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে সাময়িক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা নেই।’

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। সেখান ভালো মানের প্রতি কেজি পেঁয়াজ আমদানি করতে ৯০ টাকার মতো খরচ পড়ছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি করতে আমদানিকারকদের বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে, যার কারণে দেশে পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।

বিরামপুর নতুন বাজারের পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী বাবুল হোসেন বলেন, সকাল থেকে ভারতের ইন্দুর জাতের পেঁয়াজ ৯৪ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। শনিবার থেকে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।