নিজস্ব প্রতিবেদক: দেখতে মনে হবে হীরার নেকলেস। অথবা হীরার আদলে জুয়েলারি নেকলেস। কিন্তু এটি হীরা বা জুয়েলারির নেকলেস নয়। নেকলেসের উপর হীরার বদলে বসানো হয়েছে স্বর্ণ। আবার পাথর খচিত আংটি, চেইনের উপর বসানো হয়েছে স্বর্ণ। মূলত কাস্টমসকে বোকা বানিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের উদ্দেশ্যে হীরা ও পাথর খচিত নেকলেসসহ অন্যান্য জুয়েলারি পণ্যের স্বর্ণ বসানো হয়েছে।

তবে চৌকস কাস্টমস কর্মকর্তারা চোরাচালান রুখে দিয়েছে। দুবাই ফেরত এক চতুর যাত্রীর হীরক ও পাথর খচিত নেকলেসসহ অন্যান্য পণ্য থেকে প্রায় দুই কেজির বেশি স্বর্ণ আটক করেছে। সোমবার (১৫ নভেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা এই স্বর্ণ আটক করেন। ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) মো. সানোয়ারুল কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, স্বর্ণ চোরাচালানের তথ্য পায় কাস্টম হাউস কমিশনার। এরই প্রেক্ষিতে বিমানবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারা নজরদারি বৃদ্ধি করেন। সোমবার সকাল ১১টা ৬ মিনিটে দুবাই হতে ইকে ৫৮৪ এর একটি ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। শাহজাহান মিয়া নামে একজন যাত্রী ইমিগ্রেশন শেষ করে ২৩২ গ্রাম ওজনের দুইটি স্বর্ণবার ঘোষণা দেয়, যার বিপরীতে প্রযোজ্য শুল্ককর পরিশোধও করেন। এছাড়া ওই যাত্রীকে ৯৬ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার আনার ক্ষেত্রে ব্যাগেজ সুবিধা প্রদান করা হয়। আর কোন স্বর্ণ নেই বলে ঘোষণা দেয়।

যাত্রী গ্রীন চ্যানেল অতিক্রম করার সময় যাত্রীর সঙ্গে থাকা লাগেজ ব্যাগ স্ক্যানিং করা হয়। এসময় যাত্রীর ট্রলি ব্যাগের ভেতর স্বর্ণের অস্তিত্বের ইমেজ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে যাত্রীর ট্রলি ব্যাগ খোলা হয়। যাতে ওই যাত্রীর স্বর্ণ চোরাচালানের কৌশল দেখে কাস্টমস কর্মকর্তা ও অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। যাত্রীর ব্যাগ থেকে হীরক ও অন্যান্য পাথর খচিত (হীরক ও স্বর্ণ সদৃশ) স্বর্ণের ১৮টি নেকলেস ও একটি চেইন (স্টোন ও ট্যাগসহ ৭১৪.৮৭৬ গ্রাম), ২৭৮টি আংটি (স্টোন ও ট্যাগসহ ১৫১০.৩২ গ্রাম), ছয়টি চেইন (স্টোন ও ট্যাগসহ ৩১.৯৯ গ্রাম) উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ২২৫৭ দশমিক ১৮৬ গ্রাম।

উপ-কমিশনার আরো জানান, যাত্রী মিথ্যা ঘোষণা প্রদান করায় তার ঘোষিত ও শুল্ক পরিশোধিত দুইটি স্বর্ণবার এবং ব্যাগেজ সুবিধায় নেয়া ৯৬ গ্রাম স্বর্ণালংকারসহ আটককৃত স্বর্ণের মোট ওজন ২৫৮৫ দশমিক ১৮৬ গ্রাম। আটককৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য এক কোটি ৫০ লাখ টাকা। স্বর্ণসহ ওই যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। আটক যাত্রীর বাড়ি হবিগঞ্জ জেলায়। তার বিরুদ্ধে কাস্টমস আইন ব্যবস্থা নেয়া ও ফোজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হীরক ও পাথর খচিত খন্ডে স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে ঢাকা কাস্টম হাউসের বিরাট সাফল্য বলে জানান তিনি।