শেয়ার বিজ ডেস্ক:যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। খবর: রয়টার্স।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মার্কিন কূটনীতির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় কিসিঞ্জারকে।
স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এতে জানানো হয়, কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।
১৯২৩ সালের ২৭ মে জার্মানির এক ইহুদি পরিবারে জন্ম কিসিঞ্জারের। পরে তার পরিবার পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যায়। ওই শহরেই বেড়ে ওঠেন কিসিঞ্জার।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জেরাল্ড ফোর্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার।
আট বছর মার্কিন সরকারে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কিসিঞ্জার। তার ব্যাপারে সবচেয়ে উদার যেসব ভাষ্য, সেগুলোর তথ্য আমলে নিলেও কিসিঞ্জার যেসব হন্তারক শাসকদের সমর্থন করেছিলেন, তারা যেসব সংঘাত পরিচালনা করেছিল, তাতে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটেছিল।
অনেকে কিসিঞ্জারের নানা বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তাকে যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত করে থাকেন।
কম্বোডিয়া ও লাওসে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সম্প্রসারণ, চিলি ও আর্জেন্টিনায় সামরিক অভ্যুত্থানে সমর্থন, ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ইন্দোনেশিয়ার রক্তক্ষয়ী অভিযানের পক্ষে অবস্থান নেয়া এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যাপক নৃশংসতার বিষয়ে চোখ বন্ধ রাখাÑএসব অভিযোগ রয়েছে কিসিঞ্জারের বিরুদ্ধে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির দায়িত্বে থাকাকালে কিসিঞ্জার পাকিস্তানের কাছে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে বাঙালির বিরুদ্ধে নৃশংস দমন-পীড়নে এই অস্ত্র ব্যবহার করেছিল পাকিস্তান।
তবে বিশ্বের নানা প্রান্তে যুদ্ধ-সংঘাতের ‘কারিগর’ কিসিঞ্জারকে কখনও সেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। আর এ নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
কিসিঞ্জারকে ‘আমেরিকার সবচেয়ে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে অভিহিত করেছে দেশটির সংবাদ ওয়েবসাইট হাফপোস্ট। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির একসময়কার প্রতাপশালী ব্যক্তি কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল। কিন্তু তিনি তার সিদ্ধান্তের জন্য কখনও অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওয়াশিংটনের অভিজাত রাজনৈতিক সমাজের একজন সদস্য হিসেবে ভালো অবস্থানে ছিলেন।