নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১০ কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে। কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন বিনিয়োগকারীরা। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমে যাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছেÑসিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন, জিবিবি পাওয়ার, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, যমুনা অয়েল, লুবরেফ বিডি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা অয়েল এবং সামিট পাওয়ার।
চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি কোম্পানির বিনিয়োগ হালনাগাদ প্রকাশ করছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, এই মাসে ১০ কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে। অন্যদিকে, ১১ কোম্পানির বিনিয়োগ বেড়েছে এবং একটি কোম্পানির বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এক দশমিক ২৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৩৫ দশমিক ৭১ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে এক দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৯৫ শতাংশে। এ সময় বিদেশি বিনিয়োগ শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৫৯ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ২৮ দশমকি ১৮ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ২৮ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে ৬ দশমিক ৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৭ দশমিক ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত জিবিবি পাওয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৫৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ৩০ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৫৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ৫৬ শতাংশে। এ সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত যমুনা অয়েলের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৬৩ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশে। এই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত লুবরেফ বিডির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৫৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫ দশমিক ১৬ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মেঘনা পেট্রোলিয়ামের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৮ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত পদ্মা অয়েলের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ৩১ দশমিক ৬০ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৪৯ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ১৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ০৪ শতাংশে।
২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সামিট পাওয়ারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশে। একই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিল ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ; যা চলতি বছরের এপ্রিলে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৭১ শতাংশে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের এই উত্থান-পতন পুঁজিবাজারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ গতিবিধি সম্পর্কে নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দামের অস্থিরতা এবং দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এই খাতের কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে। আগামী দিনগুলোয় এই প্রবণতা কীভাবে পরিবর্তিত হয়, তা দেখার জন্য বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষায় রয়েছেন।