মহসিন মিলন, বেনাপোল (যশোর): বেনাপোল পৌরসভার দুর্গাপুর গ্রাম থেকে চেকপোস্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণের ১০ দিনের মাথায় পা দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে পিচ। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তাদের অভিযোগ, নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বেহাল অবস্থা হয়েছে সড়কটির।
জানা গেছে, প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয় গত ১২ জানুয়ারি। কিন্তু নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালু, পাথর, পিচ এমনকি পোড়া মোবিল ব্যবহার করে ইতোমধ্যে ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মধ্যে সড়কের নামাজ গ্রাম এলাকায় পা দিয়ে ঘষলেই উঠে যাচ্ছে পাথর।
সূত্র জানায়, ঝিনাইদহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিশিত বসু পৌরসভার এ সড়কের নির্মাণকাজ করছেন। প্রকৃতপক্ষে বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলাম নিজের অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সটি ভাড়া করে গত পাঁচ বছর ধরে পৌর সভার বিভিন্ন উন্নয়নকাজ করে আসছে। তিনি বড় ধরনের অনিয়ম করে নিজেই বিল সাবমিট করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ করেছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
নামাজ গ্রামের মোস্তাক আহমেদ স্বপন অভিযোগ করে বলেন, ‘বেনাপোল পৌরসভার সচিব হাতে গোনা ১/২ জন ঠিকাদার দিয়ে গোপনে টেন্ডার করিয়ে নিজেদের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা করে আসছে। আমাদের বিশ্বাস, পৌরসভার কর্মকর্তারা নিজেরাই এসব লুটপাট করে যাচ্ছে।’
বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আকবর হোসেন বলেন, শুধু এ সড়কটি নয় বেনাপোল পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে রাস্তা, সড়ক, ড্রেন, কালভার্ট ও ফুটপথ নির্মাণে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা তছরূপ করছে বেনাপোল পৌরসভা। সড়কটিতে পিচের বদলে পোড়া মোবিল ব্যবহার করায় পা দিয়ে ঘষা দিলেই পিচ উঠে যাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু বলেন, ‘বেনাপোল পৌরসভার সচিব সব উন্নয়নকাজ অন্যের লাইসেন্স ভাড়া করে নিজেই ঠিকাদারি কাজ করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।’
তবে বেনাপোল পৌর সভার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুই কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ নিয়ম মেনেই কাজ করা হয়েছে। ১১ কোটি টাকার সড়কটি প্যাকেজ আকারে করা হচ্ছে। তবে আপনি অফিসে আসেন, বসে কথা বলা যাবে।’
এছাড়া এ বিষয়ে কথা বলতে বেনাপোল পৌরসভার সচিব রফিকুল ইসলামকে বারবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।