শেয়ার বিজ ডেস্ক: মঙ্গলবার জাপানের ওপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া। এ ঘটনায় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বেড়েছে স্বর্ণের চাহিদা। এর প্রভাব পড়েছে মূল্যবান ধাতুটির দরে। গত মঙ্গলবার টানা তিন দিনের মতো স্বর্ণের দর বেড়ে সাড়ে ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছায়। খবর রয়টার্স।
নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জের (নিমেক্স) কোমেক্স বিভাগে গত মঙ্গলবার ডিসেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে আউন্সে স্বর্ণের দর বেড়েছে দশমিক ছয় শতাংশ। ওইদিন এ বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণ লেনদেন হয় এক হাজার ৩২৩ ডলারে। এছাড়া স্পট গোল্ডের দামও দশমিক ছয় শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স লেনদেন হয় এক হাজার ৩১৭ ডলার ৪৭ সেন্টে। এদিন লেনদেনের শুরুর দিকে ধাতুটির দর এক হাজার ৩২২ ডলার ৩৩ সেন্ট পর্যন্ত পৌঁছায়। গত বছরের ৯ নভেম্বরের পর এটিই সর্বোচ্চ দাম।
গত মঙ্গলবার জাপানের ওপর দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়া। এ ঘটনা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য চরম হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে প্রভাব পড়ে ডলারের দামে। ওইদিন জাপানি মুদ্রা ইয়েনের দাম ডলারের বিপরীতে বেড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছায়। এ অস্থিতিশীলতায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে। আর এ কারণেই দাম বাড়ছে ধাতুটির।
আইসিবিসি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের টোকিও শাখা ব্যবস্থাপক ইউচি কেমিজু বলেন, জাপানের ওপর দিয়ে উত্তর কোরিয়ার মিসাইল নিক্ষেপে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে জাপানি মুদ্রা ও স্বর্ণের দামে প্রভাব পড়ছে।
সাধারণত ডলারের মান যখন দুর্বল হয়ে ওঠে, তখন স্বর্ণসহ নির্ধারিত বিভিন্ন ধাতুতে বিনিয়োগ নিরাপদ মনে করে বিনিয়োগকারীরা, ফলে ধাতুটির দাম বাড়ে। আর ডলার শক্ত অবস্থানে থাকলে স্বর্ণের দাম কমে।
তাছাড়া রাজনৈতিক বা আর্থিক কোনো অস্থিরতা দেখা দিলেও এই পণ্যটির দর বাড়ে। কারণ এ সময় এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যায়। স্বর্ণকে তখন মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ ভাবে।
এদিকে ডলারের দরপতন ও সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নমনীয় অবস্থানের গুজবও স্বর্ণের দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। দুর্বল মূল্যস্ফীতির কারণে সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে ফেড চাপের মুখে থাকবে এমন আশায় চলতি বছর স্বর্ণের দাম ১৪ শতাংশ বেড়েছে। টেক্সাসের হিউস্টনে ঘূর্ণিঝড় হার্ভির ধ্বংসযজ্ঞের খবরে গত সোমবার ডলারের দাম পড়ে যায়। এতে স্বর্ণের মতো নিরাপদ সম্পদের চাহিদা বেড়ে যায়। গত সপ্তাহে ব্যাংক অব আমেরিকার সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ মেরিল লিঞ্চ জানায়, স্বর্ণের বাজার সঠিক পথেই আছে এবং আগামী বছরের শুরুতে পণ্যটির দাম আউন্সপ্রতি এক হাজার ৪০০ ডলার স্পর্শ করবে। শিকাগোভিত্তিক আরজেও ফিউচারসের বাজার বিশেষজ্ঞ ফিল স্ট্রাইবল বলেন, চলতি বছরের বাকি সময়ে সুদহার বাড়াতে ফেড আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে পারে।
