Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 9:23 pm

১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার ৯৩% কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) কৃষি ও পল্লি খাতে লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ দশমিক ২৮ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা কৃষি ও অকৃষি পল্লিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
পুরো অর্থবছরজুড়ে এ খাতে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করবে বলে ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল।
জানা গেছে, প্রতিবার অর্থবছরের শুরুতে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণ-সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগেই ব্যাংকগুলো নিজেরাই তাদের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবগত করে। তবে প্রতিটি ব্যাংকের জন্যই তাদের মোট ঋণের অন্তত দুই শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৯৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। ওই অর্থবছরে এ ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণ করে ১৯ হাজার ৬২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। অবশ্য অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার ১০৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো। অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা।
আগে কোনো ব্যাংক কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে অনর্জিত অংশের পুরোটাই বিনা সুদে এক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হতো। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে এ বিধানে শিথিলতা এনে অনর্জিত অংশের তিন শতাংশ বিনা সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখার বিধান করা হয়। তাছাড়া শিল্প খাতসহ অন্যান্য খাতে ব্যাংকগুলো নিজেদের মতো করে সুদহার নির্ধারণ করতে পারলেও কৃষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ৯ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারে না ব্যাংকগুলো। এসব কারণে কৃষিঋণ বিতরণে অনীহা দেখায় বেসরকারি ও বিদেশি অনেক ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে বিগত সময়ের ২০ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা কৃষিঋণ আদায় করেছে ব্যাংকগুলো। মে মাস শেষে বিতরণ করা কৃষিঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৬১০ কোটি টাকায়।
জানা গেছে, শস্য উৎপাদন, সেচ ও কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা, গবাদিপশু ও মুরগি পালন, মৎস্য চাষ, শস্য সংরক্ষণ ও বিপণনে ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ দিয়ে থাকে। পল্লি অঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচনে অকৃষি পল্লিঋণ বিতরণ করা হয়।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে পাঁচ দশমিক ৬৮ শতাংশ। যেখানে পল্লিঋণ বিতরণ কমেছে তিন দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ।
বিদায়ী অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে বিতরণ করা ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে কৃষিঋণ ছিল ১৫ হাজার ৮৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং পল্লিঋণ ছিল চার হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা।
তবে আলোচ্য সময়ে কৃষিঋণের তুলনায় পল্লিঋণ আদায় বেশি ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে কৃষিঋণ আদায় বেড়েছে তিন দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং পল্লিঋণ আদায় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ।