নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১২ হাজার ১৬৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়সংবলিত আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ থেকে ব্যয় মেটানো হবে আট হাজার ৯১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
সভাশেষে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমরা এখন কিছু দিন পরপর একনেক সভা করি, তাই সভার শুরুতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেছি। সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতি এখন স্থীতিশীল অবস্থায় আছে। যেটুকু অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল তা বৈশ্বিক কারণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি গত বছরের তুলনায় অনেক কমেছে। আমাদের
রিজার্ভও বাড়ছে।’
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত কোনো পণ্যের চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে। এটা অর্থনীতির চিরাচরিত নিয়ম। রমজানে দাম বাড়তে পারে, কারণ সে সময় চাহিদা একটু বেশি হয়। তবে তা সাধ্যের মধ্যে থাকবে বলে আমি মনে করি।’
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানান, একনেক সভায় প্রায় ১২ হাজার ১৬৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ের আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন তিন হাজার ৯৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা ও বৈদেশিক অর্থায়ন আট হাজার ৯১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর বাইরে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১৫৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলোÑবিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন-গ্রিড সম্প্র্রসারণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোমোটিং জেন্ডার রেসপন্সসিভ এন্টারপ্রাইজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড টিভিইটি সিস্টেম প্রকল্প, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ‘কাস্টমস আধুনিকায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি): প্রজেক্ট কো অর্ডিনেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (পিসিএমইউ) (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন (এসসিআরডি)’ প্রকল্প; ‘ময়মনসিংহ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প; ‘অভিযোজন বাড়ানো ও দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে টেকসই অবকাঠামো (রিভার)’ প্রকল্প; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন ও নদী তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প।
এছাড়া চারটি প্রকল্প ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হলোÑশ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিপ মডেল টেস্টিং সেন্টার স্থাপন (টোয়িং ট্যাংক) (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘গোপালগঞ্জ এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের তৃতীয় শাখা কারখানা স্থাপন (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘খুলনা থেকে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প।
একনেক সভায় অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা।