১৪ বছর পর আগামীকাল চবির পঞ্চম সমাবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সর্বশেষ সমাবর্তন হয়েছিল ২০১০ সালে। গত ১৪ বছরে ১৪টি ব্যাচ পাস করে বের হয়েছে। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতায় ধারাবাহিকভাবে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামীকাল চবিতে পঞ্চম সমার্বতন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি-লিট দেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবর্তনের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে ভিসি ড. মুহাম্মদ ইয়াহিয়া। এতে প্রো-ভিসি কামাল উদ্দিন, শামীম উদ্দিন খান, সমাবর্তন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটোওয়ারি, তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক সহযোগী অধ্যাপক মো. শহীদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে এনায়েত উল্ল্যা বলেন, এখন পর্যন্ত ২২ হাজার ৫৮৬ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ অনুষ্ঠানে প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। এতে ১০ কোটি টাকা ঘাটতি থাকবে। সমাবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দেয়া হবে।

শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অতিথিসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসার জন্য প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে। সমাবর্তনে ৪২ জনকে পিএইচডি, ৩৩ জনকে এমফিলসহ মোট ২২ হাজার ৫৮৬ শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। অংশগ্রহণকারীরা সোমবার থেকে শুরু করে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিজ বিভাগ থেকে গাউন ও টুপি নিতে পারবেন। এরপর দুপুর ১টার মধ্যে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের প্যান্ডেলে ঢুকতে হবে। এরপর আর কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্যান্ডেলের ভেতরে আমন্ত্রণপত্র ও মুঠোফোন ছাড়া অন্য কোনো কিছু বহন করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে আসা অতিথিদের কেউ প্যান্ডেলের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। তাদের জন্য বিভাগগুলোর কিছু কক্ষ বরাদ্দ রাখা হবে। অংশগ্রহণকারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রায় ১০০টি বাস চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। সমাবর্তনের দিন ক্যাম্পাসের ভেতরে কোনো ধরনের ব্যক্তিগত গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ১ নম্বর গেট এলাকা পর্যন্ত আসতে পারবে। সেখান থেকে শাটল বাসে করে অংশগ্রহণকারীদের ক্যাম্পাসে আসতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সমাবর্তন পাওয়ার যে অধিকার, সেটা থেকে তারা সাড়ে ১৪ বছর বঞ্চিত ছিলেন। এ কারণেই সমাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ উপাচার্য আরও বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ডিগ্রির অভাব নেই। এরপরও তাকে আমরা সম্মানিত করতে চেয়েছি। তাকে সম্মানিত করতে পারলে বিশ্বব্যাপী আমরাও সম্মানিত হব।’

আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, সমাবর্তনের অনুষ্ঠানের অতিথিদের আসন গ্রহণ শুরু হবে দুপুর দেড়টায়। ওই দিন দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে সমাবর্তন শোভাযাত্রা হবে। তবে এতে কোনো গ্র্যাজুয়েট অংশ নিতে পারবেন না। পরে বেলা ২টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, ডি-লিট গ্রহণ, শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য, উপাচার্যের বক্তব্য, দুই সহ-উপাচার্যের বক্তব্য মিলিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হবে বিকালে।