Print Date & Time : 15 August 2025 Friday 3:07 am

১৮ ঊর্ধ্ব বয়সীদের জন্য টিকা সংগ্রহ করুন

মহামারি কভিডের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত তৈরি করা হয়েছে। এগুলো অনুযায়ী কভিডে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ২৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সীরা। গত দুই মাসের দৈনিক হিসাব বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে ভিন্ন চিত্র। গত বছরের মার্চ থেকে গত ১৩ মে পর্যন্ত ১৪ মাসে দৈনিক যে হারে বিভিন্ন বয়সীদের মৃত্যু ঘটেছে, সেই তুলনায় গত দুই মাসে দৈনিক আনুপাতিক মৃত্যুহার বেশি হচ্ছে ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের। সংক্রমণ যতই বাড়ছে, তা ছড়িয়ে পড়ছে সব বয়সীদের মধ্যে। এমনকি নবজাতক থেকে শুরু করে চার বছর বয়সী শিশুরাও উদ্বেগজনক হারে আক্রান্ত হচ্ছে।

এটি এখন স্বীকৃত সত্য, সব বয়সী মানুষই কভিডে সংক্রমিত হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে ভাইরাস ছড়ায় না, এটা এখন পর্যন্ত কেউ বলেনি। বরং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবারে শিশু ও বয়স্কদের আক্রান্ত করার জন্য দায়ী অন্য বয়সীরা, যারা বাইরে গিয়ে সংক্রমণ ঘরে টেনে আনছে। এ ছাড়া সব সময়ই অপেক্ষাকৃত তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, কারণ তারাই বেশি বাইরে যায়।

আগে যখন আক্রান্ত কম ছিল, তখন তরুণদের প্রাণহানিও কম ছিল। এখন সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে তাদের বিষয়ে অধিকতর সতর্কতা কাম্য। নিজে বাঁচতে এবং পরিবারের অন্যদের বাঁচতে তাদের সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সামনে এসেছে। গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৮ বছর হলেই টিকার নিবন্ধনের সুযোগ দেয়ার ‘ভাবনা’ আছে সরকারের। বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘… আমাদের ছেলেমেয়েদের তাড়াতাড়ি স্কুল-কলেজে পাঠাতে চাই। তাদের জীবনের একটা বছর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’

যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও কভিডের প্রধান প্রতিষেধক টিকা। তাই ১৮ বছর হলেই টিকার নিবন্ধন করার খবরকে ইতিবাচকই বলতে হয়। কিন্তু টিকার সংগ্রহ নেই, আর নিবন্ধন করলেই টিকা পাওয়া নিশ্চিত নয়।

১৮ বছরের কিশোর-তরুণদের ঘরে রাখা সম্ভব নয়। ঘরে কতদিনই রাখা যায়! তারা যেহেতু বের হবেই, তাই তাদের জন্য টিকার ব্যবস্থা করা জরুরি। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে তরুণদের অধিকতর সতর্ক থাকা উচিত। শিশু-বয়োবৃদ্ধদের ঘরের বাইরে তেমন একটা যাওয়া হয় না। অথচ তারা সংক্রমিত হচ্ছে। হয়তো ভাইরাস বহন করে এনেছে ঘরের কিশোর-তরুণ বয়সীরা। অসতর্কভাবে বাইরে গিয়ে নিজে আক্রান্ত হয়, অন্যকে আক্রান্ত করে।

অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানো গেলে কভিড-১৯ টিকাসহ অন্যান্য ভাইরাসজনিত মহামারি প্রতিরোধ করা সহজ হবে। তাই শুধু টিকা দেয়ার ‘ভাবনা’য় সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। প্রায়ই শোনা যায়, কোটি কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য ক্রয়াদেশ দেয়া আছে। কিন্তু সেগুলো সময়মতো আসছে কি না, তাও দেশবাসীকে জানাতে হবে। উপহার হিসেবে পাওয়ার অপেক্ষায় না থেকে অবশ্যই টিকা কেনায় জোর দিতে হবে। কভিডের অভিঘাত বহুমাত্রিক। টিকার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও টিকা সংগ্রহে ধীরগতিতে যেন জনদুর্ভোগ বেড়ে না যায়।